‘পঞ্চায়েতের ইতিহাস নতুন নয়’, মৃত্যু-খতিয়ান তুলে ধরে বিরোধীদের নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

‘পঞ্চায়েতের ইতিহাস নতুন নয়’, মৃত্যু-খতিয়ান তুলে ধরে বিরোধীদের নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

ডায়মন্ড হারবার : পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election)। গ্রাম বাংলা দখলের লড়াই। গণতন্ত্রের যে উৎসবে একাধিক প্রাণের বলি। মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। একজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। শুরুর দিনেই মৃত্যু হয়েছিল একজনের। গ্রাম বাংলা দখলের নির্বাচনের ছ’দিনের মনোনয়ন পর্বে প্রাণ হারালেন ৫ জন। শুধু মৃত্যুই নয়, জেলায় জেলায় গুলি-বোমাবাজি, হিংসা, সংঘর্ষ দেখেছে বাংলা। যা দেখেই মনোনয়ন পর্বের (Nomination Filing) শেষে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৩ সালের পর ফের ২০২৩ সালে ফের গ্রাম বাংলার ভোট অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ করতে রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)।

বাংলার পঞ্চায়েত ভোটের মাঝে রক্তস্নাত হওয়ার ইতিহাস নতুন নয়। মনোনয়ন পর্বের মাঝে মৃত্যুর সারি নিয়ে যখন রাজ্য সরকারকে নিশানা করছে বিরোধীরা, তখন পাল্টা তাদের একযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেছেন আগের পঞ্চায়েত ভোটগুলিতে মৃত্যুর খতিয়ান। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘খারাপ লাগলে এই যে প্রায় ৭৩-৭৪ হাজার বুথ রাজ্যে, যার মধ্যে ৩ টে জায়গায় ঝামেলা হয়েছে। তাও নিজেদের মধ্যে বিবাদের জেরে। আমাদের দল এতে কোনওভাবেই যুক্ত নয়। লক্ষাধিকের মতো মনোনয়ন তাই জমা পড়েছে, ইতিহাসে কোথাও এত আগে পড়েনি।’

যার পরই বিরোধীদের প্রতি সুর চড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছেন, ‘পঞ্চায়েতে ইতিহাস নতুন কিছু নয়। ২০০৩ সালে সিপিএম আমলে সম্ভবত ৩৬ জন মারা গিয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন। ২০০৮ সালেও সংখ্যাটা ওইরকমই। ২০১৩ সালে রাজ্য নির্বাচনের কমিশনার মীরা পাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এনেছিলেন, সেবার ৩৯ জন মারা গিয়েছিল। পঞ্চায়েতের সমস্যা একটাই। এত নিচু স্তরে ভোট, কখনও কখনও একই বাড়ির চারজন ভোটে দাঁড়িয়ে যায়।’

বিরোধীদের নিশানা শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে, ত্রিপুরায় তো ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে মনোনয়নই জমা দিতে দেওয়া হয় না। পকসো কেসেও অ্যারেস্ট হয় না। এখানে বিধানসভা ভোটের পরে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আইনশৃঙ্খলা থাকার সময়ও যে মৃত্যু হয়েছে তাঁর জন্যও আমাদের ছেলেদের অ্যারেস্ট করেছে। ১৫৫টা সেন্ট্রাল টিম পাঠানো হয়েছে। কোথাও মারছে, কোথাও কাটছে। কোর্টে গিয়েও খুন করে দিয়ে আসছে। দানবের রাজত্ব চলছে। কিন্তু সেখানে নক্কারজনক কয়েকটা রাজনৈতিক দল, যাদের নাম বলতে আমার ঘৃণা হয়। যারা মানুষকে খুন করত। নন্দীগ্রামে এখনও খুঁজলে হয়তো মৃতদেহ পাওয়া যাবে। হাত কাটত, পা কাটত, মুন্ডু কাটত, কাউকে নমিনেশন ফাইল করতে দেওয়া হত না। ১০০-এ ১০০ ভোট পেত, আর আজ তারা গলা উঁচিয়ে বড় বড় কথা বলছে।’ পাশাপাশি বিরোধীদের তৃণমূল সুপ্রিমোর হুঁশিয়ারি, ‘ওরা নাকি প্রতিরোধ করবে। হ্যাঁ, নিজেদের কথা প্রতিরোধ করুন। শুভ শক্তির উদয় হোক। নাহলে জানবেন এক হাতে তালি বাজে না।’

(Feed Source: abplive.com)