ইদানীং ছোটদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে হৃদরোগের প্রবণতা। গত কয়েকদিনে সারা দেশে এমন কয়েকটি খবর আতঙ্ক তৈরি করেছে।
সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য সুষম খাদ্যের উপর জোর দেওয়া দরকার৷ ফাস্ট-ফুডের প্রতি আকর্ষণ স্থূলতার হার বাড়াচ্ছে। শিশুদের খাদ্য তালিকায় পুষ্টির অভাব যেন না হয়, তা দেখতে হবে। শরীরচর্চা, শর্করা এবং ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ কমানো, একটানা বসে থাকার অভ্যাস কাটিয়ে ওঠার মধ্যে দিয়ে হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়া যায়।
শিশুদের হৃদ-স্বাস্থ্যের সুস্থতার জন্য কী করতে হবে জেনে নেওয়া যাক মুম্বইয়ের এশিয়ান হার্ট ইনস্টিটিউটের ইন্টার্ভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. অভিজিৎ বোরসের কাছ থেকে—
ফাস্ট-ফুডের প্রভাব
এখন ফাস্ট ফুড খুবই জনপ্রিয়। স্বাদের জন্য তো বটেই, পাশাপাশি চটজলদি খাবার চাহিদা মেটাতে গিয়ে শিশুদের মধ্যে স্থূলতার হার বাড়ছে। ফাস্ট ফুডে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট, শর্করা এবং সোডিয়াম বেশি থাকে।
নিয়মিত এই খাবার খেলে ওজন, কোলেস্টেরলের মাত্রা—সবই বাড়বে। যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াবে। তাই প্রথমেই শিশুদের খাবার থালায় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে।
সুষম খাদ্য: সুস্থতার চাবিকাঠি
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য সুষম খাদ্য প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার শিশুদের দিতে হবে। যেমন—
ফল এবং সবজি
শিশুদের রঙিন ফল এবং শাকসবজির খেতে উৎসাহ দিতে হবে। এথেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ফাইবার পাওয়া যাবে যা, কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
গোটা শস্য
গোটা শস্য সব থেকে ভাল। রুটি, পাস্তা এবং সিরিয়াল হিসেবেও এগুলি বেছে নিতে হবে। গোটা শস্যের ফাইবার হজমে সাহায্য করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কম ফ্যাট-যুক্ত প্রোটিন
কম ফ্যাট-যুক্ত স্যাচুরেটেড প্রোটিন যেমন লেগুম এবং টফু বেছে নেওয়া যেতে পারে। এগুলিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম। শিশুদের বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে এটি।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। এই ফ্যাট প্রদাহ কমাতে এবং ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
কম চিনি
প্রচুর চিনিযুক্ত পানীয়, প্যাকেটজাত খাবার, ডেজার্ট ইত্যাদি খাওয়া কমানো দরকার। পরিবর্তে, জল, তাজা ফল, ঘরে তৈরি গ্রানোলা বার বা দইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে হবে। শর্করা এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট কমানোর মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যেতে পারে। এতে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এছাড়া, নিয়মিত খেলাধুলো, ব্যায়াম করতে হবে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমিং থেকে শিশুকে বের করে আনতে হবে।