বাঘে গরুতে একঘাটে জল খাবে, ’২৬ সালে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের জোট হবে, দাবি সুকান্তের

বাঘে গরুতে একঘাটে জল খাবে, ’২৬ সালে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের জোট হবে, দাবি সুকান্তের

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। সেই আবহেই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচ (WB Assembly Elections 2026) ন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তাঁর দাবি, সিপিএম (CPM) এবং কংগ্রেস (Congress) মিলেই তৃণমূলকে (TMC) জিতিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে। ছদ্মবেশে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করলেও তিনি অবাক হবেন না বলে জানালেন।

বিজেপি-র ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাজভবনে যান সুকান্ত (Panchayta Elections 2023)। পরে বিধানসভায় অনন্ত মহারাজের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মুহূ্র্তেও উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়েই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন। সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি-র ধরাশায়ী হওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে এক আশনে বসান তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে।

পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের লড়াই.য়ের প্রসঙ্গ উঠলে এদিন সুকান্ত বলেন, “কোথায় লড়াই করেছে? বরং ভোট কেটে বেশ কয়েক জায়গায় তৃণমূলকে জিতিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। পঞ্চায়েতে একভোটেও হার-জিত হয়। ছদ্মবেশে লড়াই করছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। দেখাচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে,প্রকারান্তরে তৃণমূলের সুবিধা করে দিচ্ছে।”

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় স্তরে বিজেপি-র বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। এদিন সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, “আমি বলছি, কী হয় দেখুন। কেন্দ্রের দিকে নজর রাখুন। ২০২৪-এ কী হয় দেখুন। ‘২৪-এর পর বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খাবে। ২০২৬-এর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়াই করলেও অবাক হব না।”

যদিও এ নিয়ে সুকান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “তৃণমূল থেকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। উনি বরং নিজের চরকায় তেল দিন। এত কথা বলে লাভ কী! তৃণমূল থেকে দলে দলে বিজেপি-তে নিয়ে গিয়েছেন লোকজনকে। ভোটের পর আবার ফেরতও পাঠিয়েছেন। উনি বিজেপি-তে তৃণমূল বিশারদ হতে পারেন, কিন্তু বামেদের নিয়ে এত কথা বলার যোগ্যতা রয়েছে বলে মনে হয় না। আসলে নিজেদের অসুবিধা হলেই বিজেপি বলে সিপিএম সুবিধা করে দিচ্ছে তৃণমূলকে। তৃণমূলের অসুবিধা হলে বলে, সিপিএম সুবিধা করে দিচ্ছে বিজেপি-কে। উনি তৃণমূলের শিক্ষা সেলের নেতা ছিলেন। ওঁর সম্পর্কে এতকিছু বোঝা সম্ভব নয়।”

অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুকান্তকে কটাক্ষ করেন কংগ্রেসরে কৌস্তভ বাগচিও। তিনি বলেন, “অপরিণত কথাবার্ত। রাজনীতিতে তেমন পূর্ব পরিচিতি নেই সুকান্তর। বরং তৃণমূল এবং বিজেপি-রই জোট হতে পারে। উনি হয়ত ইতিহাস জানেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় বিজেপি-কে প্রকৃত জোটসঙ্গী বলেছিলেন। মুকুল রায়ও সম্প্রতি বলেছেন যে, যাহা তৃণমূল, তাহাই বিজেপি। দিলীপ ঘোষও বলেন সেটিং আছে। কিছু বলার আগে পূর্বসূরি দিলীপের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারতেন। পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কেমন টালমাটাল অবস্থা জিইয়ে রাখা হয়েছিল, সকলে দেখেছেন। শুভেন্দু পর্যন্ত বলেছেন, দলের কে কী ভাবছেন, যায় আসে না তাঁর।”

সুকান্তকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। তাঁর বক্তব্য, “দিলীপ ঘোষএর মানসিক সমস্যা আছে জানতাম, কিন্তু সুকান্তকে দেখে তো মনে হতো না তেমন! কী কারণে একসঙ্গে লড়বে? তৃণমূল একাই গোটা দেওয়াল জুড়ে রয়েছে। বুক চওড়া হয়ে গিয়েছে। অমন কমিটি আসবে-যাবে। সরকারি টাকায় ফূর্তি করবে, ফাইভ স্টার হোটেলে থাকবে। তৃণমূলের কাউকে প্রয়োজন নেই।”

এবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে আশানুরূপ ফল তো দূর, তৃণমূলকে টেক্কা দেওয়ার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বিজেপি। তার পর থেকেই গোপন আঁতাতের তত্ত্ব সামনে এসেছে বিজেপি-র তরফে। এদিন সেই তত্ত্বই তুলে ধরেন সুকান্ত।

(Feed Source: abplive.com)