নিয়োগ মামলায় তাঁর রায়ে স্থগিতাদেশ, বিচারপতি গাঙ্গুলি বললেন ‘হাত-পা বাঁধা আমার’

নিয়োগ মামলায় তাঁর রায়ে স্থগিতাদেশ, বিচারপতি গাঙ্গুলি বললেন ‘হাত-পা বাঁধা আমার’

মানিক ভট্টাচার্য সংক্রান্ত একটি মামলায় তিনি যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে কিছুটা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, নিয়োগ মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যা রায় দিয়েছেন, তাতে অনেকের মনে ভয় ধরে গিয়েছে। উড়ে গিয়েছে ঘুম। যা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেউ ‘দুষ্টুমি’ করলে তাঁকে রেয়াত করবেন না। আর তাঁর নির্দেশের ফলে কোনও অভিযুক্তের যদি ঘুম উড়ে যায়, তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে এখনও হাইকোর্টের গরিমা অক্ষুণ্ণ আছে। তাঁরা বিচারব্যবস্থাকে ভয় পান এখনও।

সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস মানিকের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কয়েক মাস ধরে জেলে থাকা মানিককে জেলে গিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। যে নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন মানিক। সেই প্রেক্ষিতে মানিককে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে। সুপ্রিম কোর্টে মানিক আপাতত স্বস্তি পাওয়ার খবরে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আফসোসের সুরে তিনি মন্তব্য করেন, জালি প্রার্থীরা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তারপরও নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিকের মামলায় কেন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না বলে জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর হাত-পা বাঁধা আছে। স্রেফ শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করতে পারেন বলে জানান বিচারপতি।

সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এক আইনজীবী জানান যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের অনেকের ঘুম উড়ে গিয়েছে। রাতে ঘুমও আসছে না। যা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনওরকম ‘দুষ্টুমি’ বরদাস্ত করবেন না। কেউ ‘দুষ্টুমি’ করে রেয়াত পাবেন না বলেও জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আমজনতা কেন আদালতে আসতে হবে? আর তাঁর নির্দেশের পরে কারও যদি রাতের ঘুম উড়ে যায়, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে কলকাতা হাইকোর্টের গরিমা অক্ষুণ্ণ আছে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশকে তাঁরা এখনও ভয় পান।’

(Feed Source: hindustantimes.com)