গোলাপে ঢাকা বিরিয়ানি-চিকেন চাঁব! অশোকনগরের এই দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ভোজন রসিকরা

গোলাপে ঢাকা বিরিয়ানি-চিকেন চাঁব! অশোকনগরের এই দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ভোজন রসিকরা

অশোকনগর: খেয়েছেন নাকি কখনও গোলাপ বিরিয়ানি-চিকেন চাঁব? এখন এই বিরিয়ানি খেতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন অশোকনগরে। ৩ কেজি চাল দিয়ে শুরু করা বিরিয়ানি আজ পৌঁছেছে ৩৩ কেজি চলে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজ আমেরিকা ফেরত শেফের এই গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করে তৈরি বিরিয়ানি খেতে বিকেল থেকেই পড়ছে লম্বা লাইন। যা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে, দোকান মালিক-সহ কর্মচারীদেরও।

অশোকনগর ১৯ নম্বর কাকপুলের পেটুক রেস্টুরেন্ট। বর্তমানে পরিচিত আমেরিকা ফেরত শেফের হাতে গোলাপের বিরিয়ানির জন্যই। দীপঙ্কর অধিকারী ওরফে লাল্টু বলেই বেশি পরিচিত এই যুবক। হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স করে ২০১৩ সালে বিদেশে যান দীপঙ্কর। বিভিন্ন দেশ ঘুরে, জাহাজে কন্টিনেন্টাল শেফের কাজ নিয়ে শেষ কর্মস্থল ছিল আমেরিকা। তারপরই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনার হানা দিলে দেশে ফিরে আসেন।

ঘরবন্দি সময়ে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে থেকে নিতান্তই ইয়ার্কির ছলে তিন কেজি চাল দিয়ে নিজের হাতের জাদুতে তৈরি করেছিলেন বিরিয়ানি। সেই বিরিয়ানি সুস্বাদু করে তুলতে তাতে ব্যবহার করেছিলেন গোলাপের পাপড়ি। তারপরেই বিরিয়ানির সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ব্যবসার জন্য বিরিয়ানি বানানোর কথা মাথায় আসে লালটুর। নিজে একজন শেফ হওয়ায়, স্বাদ ও গুণগতমান নিয়ে বিন্দুমাত্র কম্প্রোমাইজ করেন না পেটুকের কর্ণধার দীপঙ্কর অধিকারী।

বিরিয়ানির পাশাপাশি এই দোকানে মেলে গোলাপের পাপড়ি দেওয়া চিকেন চাঁব। এই বিরিয়ানির দোকানে চলে বিশেষ অফারও। মাত্র ৭৫ টাকায় পাওয়া যায় গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করা চিকেন বিরিয়ানি। ১৩০ টাকায় মেলে মটন বিরিয়ানি। যদি ১২০ টাকার চিকেন বিরিয়ানির কম্বো নেন, তবে পাবেন এক পিস বিরিয়ানির চিকেন ও সঙ্গে আরও এক পিস চিকেন চাঁব। কলাপাতায় সার্ভ করা হয় খাবার।

তবে যদি এই দোকানে এসে বসে খান বিরিয়ানি, তবে আপনার জন্য রয়েছে আনলিমিটেড বিরিয়ানির রাইস। যতক্ষণ না পেট ও মনের স্বাদ মিটবে ততক্ষণ খেয়ে যেতে পারেন এই গোলাপের বিরিয়ানি। এমন অফারেই এখন রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে এই বিরিয়ানির দোকান। দুপুরের পর থেকেই খুলে যায় পেটুক। লালটু ও পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই কাঠের জালে বাড়ির মধ্যে তৈরি করেন এই বিশেষ বিরিয়ানি। বিকেলের আগেই দোকানে নিয়ে আসা হয় ভর্তি হাড়ি, শুরু হয় পরিবেশন।

বিকেল চার’টের পর থেকেই শুরু হয় হালকা ভিড়, সন্ধ্যে নামতেই রীতিমতো লাইন পরে যায় । এমনকি দোকানে বসে খাওয়ার চেয়ারেও লাইন দিয়ে খেতে হয়। কেউ ৫ প্যাকেট, কেউ ১০ প্যাকেট, এমনকি অনুষ্ঠান বাড়ির অর্ডারও আসছে এই গোলাপের বিরিয়ানির। আমেরিকা ফেরত শেফের এই বিরিয়ানিতে আকৃষ্ট গোটা অশোকনগর। তবে যদি একটু দেরি করে পৌঁছন, তবে কিন্তু মিস করবেন। কারণ, এত হাড়ি বিরিয়ানি বানিয়েও, সন্ধে আট’টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে এই গোলাপ বিরিয়ানি।

প্রতিদিন বাড়ছে বিরিয়ানির হাড়ির সংখ্যা। তবু ভিড় সামাল দিতে পারছেন না আমেরিকা ফেরত শেফ দীপঙ্কর। পরিবারের সকলেও আজ তাই ছেলের পাশে থেকে রেস্টুরেন্টে সব কাজ ভাগ করে নিয়েছেন। আগামী দিনে লালটু পরিকল্পনা করছেন পেটুক রেস্টুরেন্টের আরও শাখা খোলার। নামমাত্র লাভ রেখেই, কোয়ালিটি বজায় রেখে গোলাপের পাপড়ি-সহ ১০ রকম মসলার দিয়ে তৈরি বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে ১৯ নম্বর কাঁকপুলের ‘এই’ পেটুক রেস্টুরেন্টে। এলাকায় হিট আমেরিকা ফেরত শেফের হাতের এই গোলাপ বিরিয়ানি।

(Feed Source: news18.com)