যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছাত্রীদের, পাল্টা ধর্নায় বিদ্যুৎ, উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় অধ্যাপক

যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছাত্রীদের, পাল্টা ধর্নায় বিদ্যুৎ, উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় অধ্যাপক
ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: ফের অশান্তির আঁচ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক অধ্যাপক। শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। ওই অধ্যাপকের অভিযোগ, যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা ছাত্রীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন উপাচার্য। তার জন্যই ধর্নায় বসার কৌশল নিচ্ছেন। (Visva Bharati University)

যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ছাত্র মৃত্য়ুতে র‍্যাগিংয়ের তত্ত্ব উঠে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে কার্যতই তোলপাড় রাজ্য়। তার মধ্যেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও অশান্তি চরমে। জনা কয়েক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠছে সেখানে। অভিযোগকারিণী দুই তরুণী, বিশ্বভারতীর ছাত্রী হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন তাঁরা। (Birbhum News)

বিশ্বভারতীর ছাত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি, কয়েক জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে সামনে আসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পর পর দু’টি পোস্ট করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্ট। ওই দুই তরুণী জানান, বিশ্বভারতীতে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাঁরা।

বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয় কাটাছেঁড়া। সেই পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পাল্টা অভিযোগ করেন যে, বিশ্বভারতীর নামে অযথা কলঙ্কলেপন করার জন্য প্রতিষ্ঠানের ভিতরের এবং বাইরের এক শ্রেণির অপশক্তি অত্য়ন্ত সক্রিয়। যেনতেন প্রকারে বিশ্বভারতীকে কলুষিত করে, এরা তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে সিদ্ধহস্ত।

শুধু বিবৃতি প্রকাশই নয়, এর প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সঙ্গীত ভবনে ধর্নায় বসেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্য়ুৎ এবং অধ্য়াপকদের একাংশ। উপাচার্য মৌনব্রতও পালন করেন। তাঁদের এই অবস্থান নিয়ে আবার আপত্তি তুলেছেন অধ্যাপকদের অন্য একটি অংশ।

বিশ্বভারতীর অধ্যাপক কৌশিক ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে শান্তিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে। তার সত্যতা যাচাই না করে, বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে এভাবে ধর্নায় বসা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষকদের মধ্যে ছাত্রীদের যৌন হেনস্থা করার একটা প্রবণতা ইদানীং কালে দেখা যাচ্ছে। আমার কাছে প্রমাণও রয়েছে। ছাত্রীদের স্বার্থেই থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হয়েছে আমাকে। ছাত্রীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। তদন্তও প্রভাবিত হতে পারে। তাই এমন পদক্ষেপ।”

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাননি উপাচার্য বিদ্যুৎ।  বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনিও কোনও মন্তব্য় করতে চাননি। এ নিয়ে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই বলে জানান। কিন্তু বিশ্বভারতীর অন্দরে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ফের প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে রাজ্য়ের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে।

(Feed Source: abplive.com)