জি-২০ সম্মেলন ঘিরে এলাহি আয়োজন হয়েছে দিল্লিতে। অনুষ্ঠানস্থল ‘ভারত মণ্ডপম’ সাজিয়ে তোলা হয়েছে শিল্প এবং কারুকার্যে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের মুখে ওড়িশার কোনারকের মন্দিরের বিখ্যাত চাকাটিরপ একটি প্রতিরূপও তৈরি করে রাখা হয়েছে। তার পাশে সূর্যমন্দিরের গায়ে খোদাই করা নৃত্যরত নারীমূর্তিগুলিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেই সাজসজ্জা নজর কেড়েছে সকলেরই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেনও কৌতূহল চেপে রাখতে পারেননি।
ওড়িশার কোনারকের সূর্যমন্দিরের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। পুরী জেলায় ওই মন্দিরটি অবস্থিত। ১৩ শতকে সেটির নির্মাণ করেন গঙ্গা বংশের রাজা প্রথম লাঙ্গুলা নরসিংহদেব। তারই গায়ে ঐতিহ্যবাহী ওই চাকাটি খোদাই করা রয়েছে। ২৪টি দণ্ড রয়েছে ওই চাকায়, যা প্রাচীন ভারতের বুদ্ধিমত্তা, উন্নত সভ্যতা এবং উজ্জ্বল ভাস্কর্যের প্রতীক। চাকার ওই ২৪টি দণ্ডে ছায়া পড়লে, তার নিরিখে বলে দেওয়া যায় সময়।
কোনারকের সূর্যমন্দিরের ওই চাকা সময়, অগ্রগতি এবং পরিবর্তনের প্রতীক। গণতন্ত্রের চক্র হিসেবেও সেটিকে দেখা হয়। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সহিষ্ণুতা, সামাজিক উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার বার্তাই তুলে ধরে ওই চাকা। এবারের জি-২০ সম্মেলনের পুস্তিকায় ভারতকে ‘গণতন্ত্রের জননী’ বলে উল্লেখ করেছে দিল্লি। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কোনারকের সূর্যমন্দিরের ওই চাকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নকশায়।
এবারে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক ভারত। দিল্লির তরফে সম্মেলনের বাণী রাখা হয়েছে, ‘বসুবৈধ কুটম্বকম: এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। প্রাচীন মহা উপনিষদের সংস্কৃত লিপি থেকে এই বাণী সংগ্রহ করা হয়েছে, যার অর্থ মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা এবং অণুজীব, এই পৃথিবীতে সকল প্রাণই মূল্যবান, পৃথিবী এবং বৃহত্তর ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যেকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। এক অর্থে জীবনের জয়গানই হয়ে উঠেছে এবারের জি-২০ সম্মেলনের বিষয়বস্তু।
(Feed Source: abplive.com)