হাসপাতালে জায়গা নেই, মিলছে না এক ফোঁটা জলও! লিবিয়ায় শুধুই মৃতদেহের সারি

হাসপাতালে জায়গা নেই, মিলছে না এক ফোঁটা জলও! লিবিয়ায় শুধুই মৃতদেহের সারি

লিবিয়া: লিবিয়ার ডারনা যেন মৃত্যুপুরী। শহর জুড়ে জমা জল, কাদা, ধসে যাওয়া বাড়ি-ঘর চারিদিকে লাশের স্তূপ। ডারনার একদিকে পাহাড় অন্যদিকে ভূমধ্যসাগর আর তার মাঝেই এখন মৃত্যু উপত্যকা এই শহর। বন্যার কবলে গত তিন দিনে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবে ৫৩০০ ছাড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি।

গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রিসের উপকূলে ভূমধ্যসাগরের উপর তৈরি হয়েছিল সামুদ্রিক ঝড় ‘ড্যানিয়েল’। এর জেরে গ্রিসে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর রেকর্ড বৃষ্টি হয়। এর পরেই গত রবিবার ঝড় আছড়ে পড়ে লিবিয়ার উপকূলে। ‘ড্যানিয়েল’-এর তাণ্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে যায় আল-বায়দা, আল-মার্জ, তোবরুক, বাতাহ, বেনগাজি-র মতো শহর। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডারনা।

লিবিয়ার অন্যতম ধনী একটি শহর হল ডারনা। একদিকে নীল সমুদ্র, অন্যদিকে একের পর এক গগনচুম্বী অট্টালিকা, সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে সবুজ গাছপালা। ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল তছনছ করে দিয়েছে এই শহরকে। ভেঙেছে উঁচু ইমারত, গাঢ় নীল জল রবিবারের পর রং বদলে হয়েছে ঘোলাটে সবুজ, জমে আছে কাদা, ভেঙে গিয়েছে উপকূলে বেড় দেওয়া রাস্তা, ধুয়ে মুছে গিয়েছে জনবসতির চিহ্ন। বদলে গিয়েছে উপকূলরেখাটিও। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার বন্যার আগে এবং পরের উপগ্রহচিত্র থেকে এই তথ্য মিলেছে।

প্রবল বৃষ্টি ও হড়পা বানে প্রথমে একটি বাঁধ ভাঙে ডারনা নদীর। তারপর ভাঙে আরও দু’টি নদীবাঁধ। আর তারপরই দেখা দেয় বিরাট সুনামি। এক লহমায় খেলনার মতো ভেসে যায় বাড়িঘর, বাস, ট্রাক, গাড়ি। ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষের বসবাস করে এই বন্দর শহরে। প্রান হারায় বহু জন।

তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দৃশ্য চোখে পড়ছে ডারনার সরকারি হাসপাতালগুলিতে। আহতদের চিকিৎসার জায়গা কম পড়ায় হাজারখানেক মানুষ পড়ে হাসপাতালের বাইরে। জমে রয়েছে মৃতদেহের স্তূপ। চিহ্নিত করার জন্যও ভিড়ে ঠাসা হাসপাতাল।

পাশাপাশি মারাত্মকভাবে ব্যাহত শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফোন লাইন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ সবই বিচ্ছিন্ন। নদীর উপর ভেঙেছে একের পর এক সেতু। ব্যহত হচ্ছে উদ্ধারকার্য। সমস্যায় শহরবাসি। কোথাও নেই এক ফোঁটা খাওয়ার জল। নেই খাবারও।

(Feed Source: news18.com)