অভিষেককে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ, কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে হেনস্থা, অভিষেকের সমর্থনে ফিরহাদ

অভিষেককে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ, কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে হেনস্থা, অভিষেকের সমর্থনে ফিরহাদ
কলকাতা: নয় নয় করে আট ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) দফতরে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় এখনও ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তৃণমূল (TMC) সাংসদকে। সেই আবহেই অভিষেককে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে অভিষেককে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তিনিও।

বুধবার জাতীয় স্তরে I.N.D.I.A জোটের সমন্বয় বৈঠক ছিল। আর বুধবারই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে নোটিস দেয় ED. তাতে বিরোধী জোটের সমন্বয় বৈঠকে না গিয়ে, ED-র সামনেই হাজির হন অভিষেক। তার পর থেকে আট ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও বেরোতে পারেননি অভিষেক। জোটের বৈঠকের দিনই কেন অভিষেককে ডাকা হল, সেই প্রশ্নে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজনীতি।

সেই আবহেই এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। তিনি বলেন, “I.N.D.I.A জোটের বৈঠকে যাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় না যেতে পারেন, তার জন্যই আজ নোটিস দেওয়া হয়েছে। আমি অভিষেককে ধন্যবাদ জানাই অভিষেককে যে, বাঘের বাচ্চার মতো পরোয়া করেনি…চিঠি দিয়ে বলতেই পারত যে জোটের বৈঠক রয়েছে, যেতে পারবেন না। কিন্তু ‘মুখোমুখি হব’ বলে গিয়েছেন। অন্য়ায় ভাবে ডেকে পাঠানো, নিরপরাধ মানুষকে হেনস্থা করা, অপরাধ। কেন্দ্রীয় সংস্থা, প্রতিষ্ঠানকে সম্মান করি। দুঃখ হয় যখন ক্ষমতার জোরে ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলিকে কেন্দ্র অপব্যবহার করে।”

বুধবার I.N.D.I.A জোটের কো-অর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অভিষেকের। তার বদলে ED জিজ্ঞাসাবাদেরই মুখোমুখি হলেন অভিষেক। সকাল ১১টা বেজে ১২ মিনিটে বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। ১১টা বেজে ৩৪ মিনিটে অভিষেক পৌঁছন ED দফতরে। বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের আগে মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়েছিল চূড়ান্ত প্রস্তুতি। ছিল আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ED কর্তাদের সঙ্গে তদন্তকারী আধিকারিকদের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর অভিষেকের জন্য তৈরি করা হয় প্রশ্নমালা। এদিন বেলা ১২টা বেজে ১০ মিনিট থেকে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। ED সূত্রে দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সঙ্গে বর্তমানে তাঁর সম্পর্ক কী? তাঁর কাছে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের দায়িত্ব থেকে অব্য়াহতি নেওয়ার কোনও নথি কি রয়েছে?
লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিস থেকেই এস ডি কনসালটেন্সির কাজকর্ম পরিচালনা এবং পরিবর্তে মোটা টাকা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অ্য়াকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ উঠেছে। অভিষেককে এবিষয়ে কী জানেন, তাও জানতে চাওয়া হয়? তাপস মণ্ডল জানিয়েছেন, কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, মানিক ভট্টাচার্যের অফিসে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র অভিষেকের বার্তা নিয়ে যেতেন। এ বিষয়ে অভিষেকের কী বক্তব্য, তা-ও জানতে চাওয়া হয়।

বিরোধী জোটের বৈঠকের দিন অভিষেককে এই তলবের নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠছে। ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয় হল যে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সবসময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব, সেই তিনিই অভিষেকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত নিয়ে একেবারেই আশাবাদী নন বলে জানিয়েছেন।

(Feed Source: abplive.com)