‘যদি বিকল্প তৈরি রাখতে পারি, সেটা তো প্রশংসনীয়’, রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ফের কড়া জয়শঙ্কর

‘যদি বিকল্প তৈরি রাখতে পারি, সেটা তো প্রশংসনীয়’, রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ফের কড়া জয়শঙ্কর

নয়াদিল্লি: ‘রাশিয়া থেকে ভারতের তেল (India Purchases Russian Oil) কেনা নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলির সমালোচনা করা উচিত নয়’, আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও একবার অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (EAM S Jaishankar)।  যে ম্যুনিক সিকিউরিটি কনফারেন্সে তিনি এ কথা বললেন, সেখানে বসে ছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছিলেন জার্মানির বিদেশমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু ইস্তক মস্কো থেকে তেলের আমদানি নিয়ে নয়াদিল্লির উপর নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে পশ্চিমের দেশগুলি। যদিও ভারত মাথা নত করেনি। এদিন সেই অবস্থানই আরও একবার জানিয়ে দিলেন এদেশের বিদেশমন্ত্রী।

কী দাবি?
এই মুহূর্তে ভারতে আমদানি হওয়া অপরিশোধিত তেলের অন্যতম উৎস রাশিয়া। মোট আমদানি করা তেলের প্রায় ৩৬ শতাংশই এখন মস্কোর থেকে আমদানি করে নয়াদিল্লি। এই নিয়ে অবশ্য তীব্র সমালোচনা ও চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল ভারত সরকারকে। তবে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে অতীতে একেবারে ‘স্ট্রেট ব্যাটে’ খেলতে শোনা যায় বিদেশমন্ত্রীকে। এবারও সেই ঠাঁটেই জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা যদি একাধিক বিকল্প তৈরি করতে পারি, তা হলে তো আপনাদের এই বিষয়টিকে কুর্নিশ করা উচিত। আপনাদের মোটেও সমালোচনা করার কথা নয়।’ সঙ্গে আরও বলেন, ‘কোন দেশের ক্ষেত্রে কী ধরনের চাপ-পাল্টা চাপ কাজ করবে, সেটা ব্যাখ্যার চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে একমাত্রিক সম্পর্ক বজায় রাখা ভীষণ কঠিন। এবং এক এক দেশের সঙ্গে এক এক রকম সম্পর্ক হওয়ার নেপথ্যে আলাদা ইতিহাস রয়েছে।’ লক্ষণীয় বিষয় হল, রাশিয়া যে সময়ে-অসময়ে ভারতের পাশে থেকেছে, সে কথা এই প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে অতীতেও মনে করিয়েছেন জয়শঙ্কর। একই সঙ্গে তাঁর এও বক্তব্য ছিল, ভারতকে যেখানে জ্বালানির জন্য আমদানির উপরই নির্ভর করতে হয়, সেখানে কোথা থেকে তা কেনা হবে তার নেপথ্য়ে জ্বালানির দাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথা নির্ণায়ক বিষয়। দেশের মানুষের চাহিদা, অর্থনীতির হাল এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সবটা মাথায় রেখেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত, এ কথা শুনিয়েছিলেন তিনি। এবারও কিছুটা সেই সুরই ধরা পড়ল তাঁর মন্তব্যে।
বিদেশমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘আমরা সকলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলি…কিছু জিনিসে বিশ্বাস করি…কিছু বিষয় নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিই। কিন্তু এটাও ঘটনা যে আমরা বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছি। এসবের সঙ্গে এসে মেশে বিভিন্ন পর্যায়ের উন্নয়ন, অভিজ্ঞতার বিভিন্ন পরত। সব মিলিয়ে জীবন ভীষণ জটিল…আমার মনে হয় সেই জটিলতার মধ্যে থেকে জলবৎ তরলং কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত নয়।’ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর পর ফের শিরোনামে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই আবহে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এমন বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

(Feed Source: abplive.com)