২৪ ঘণ্টা বিমানযাত্রা করে কলকাতা পৌঁছেও ইডেনে ছক্কার বৃষ্টি মাসল রাসেলের

২৪ ঘণ্টা বিমানযাত্রা করে কলকাতা পৌঁছেও ইডেনে ছক্কার বৃষ্টি মাসল রাসেলের

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: শনিবার সকাল সাড়ে সাতটায় তিনি কলকাতার মাটি ছুঁয়েছেন। তার আগে দীর্ঘ বিমানযাত্রা। প্রথমে মায়ামি থেকে দুবাই। তারপর সেখান থেকে কলকাতা। সব মিলিয়ে প্রায় ২৪ ঘণ্টার বিমানযাত্রা। যে কেউই এত লম্বা সময় বিমানে সফর করে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। জেটল্যাগ কাটাতে গা এলিয়ে দেবেন বিছানায়।

কিন্তু আন্দ্রে রাসেল (Andre Russell) যেন অন্য ধাতুতে গড়া। বিমানযাত্রার ক্লান্তিও তাঁকে কাবু করতে পারে না। যাঁর নমুনা শনিবার দেখা গেল ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens)। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) প্র্যাক্টিসে।

শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতায় পৌঁছেছেন রাসেল। সঙ্গে ছিলেন সুনীল নারাইনও। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ কেকেআর টিম বাস যখন ইডেন গার্ডেন্সের সামনে এসে দাঁড়াল, এবং বাস থেকে নারাইন-সহ নাইট ক্রিকেটারেরা একে একে ড্রেসিংরুমের দিকে পা বাড়ালেন, দেখা পাওয়া গেল না তাঁর। তবে কি দিনটি বিশ্রামেই কাটাবেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার?

প্রশ্ন শুনে কেকেআর শিবিরের একজন বলে গেলেন, ‘রাসেল আসছে একটু পরে। আলাদা গাড়িতে।’ দেখা গেল, কেকেআরের ক্রিকেটারেরা তখন মাঠে ওয়ার্ম আপ করছেন সবে। ক্লাব হাউসের লন পেরিয়ে দীর্ঘদেহী সবুজ গালিচায় পা রাখলেন। প্র্যাক্টিস দেখতে জড়ো হওয়া শ’খানেক অত্যুৎসাহী জয়োধ্বনি দিতে থাকলেন তাঁর নামে। ‘রাসেল… রাসেল…’।

তিনি একবার ঘুরে হাত নাড়লেন। তারপর সটান হেঁটে গেলেন ইডেনের মাঝের উইকেটের ঠিক পাশে প্র্যাক্টিস নেটে। প্রথমে কিছুক্ষণ হাত ঘোরালেন। পুরো রান আপ নিয়ে নয়, তবে রাসেলকে বল করতে দেখে খুশিই হবে নাইটদের টিম ম্যানেজমেন্ট। রাসেল বল করা মানে দলের হাতে বিকল্প বেড়ে গেল। ডেথ ওভারে বল করতেও সিদ্ধহস্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তারকা।

তার পরের এক ঘণ্টায় যেটা দেখা গেল, তার জন্য হয়তো তৈরি ছিলেন না কেকেআরের অতি বড় সমর্থকও। নেটে ব্যাটিং শুরু করলেন রাসেল। ভুল লেখা হল, ব্যাট নয়। যেন গদা ঘোরাচ্ছিলেন। প্রত্যেকটা বল ব্যাটের মাঝখান দিয়ে ওড়াচ্ছিলেন গ্যালারিতে। খানিক পর ইডেনের কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়কে নেট খুলে নিতে বলা হল কেকেআর শিবির থেকে। নেট খুলেও চলল রাসেলের প্রলয়। ব্যাট হাতে আরও বিধ্বংসী। দেখে কে বলবে যে, লোকটা প্রায় একটা গোটা দিন বিমানযাত্রা করে এসেছে!

দু-একটা যে মিসহিট হল না, তা নয়। তবে রাসেলের বেশিরভাগ শটই উড়ে যাচ্ছিল সীমানার বাইরে। যেন প্রতিপক্ষদের আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। রাসেল ঝড়ের।

শুক্রবার কেকেআরকে নির্ধারিত সময়ের অনেকটা আগেই প্র্যাক্টিস বন্ধ করতে হয়েছিল। বাদ সেধেছিল বৃষ্টি। শনিবার আকাশ মেঘলা থাকলেও, বৃষ্টি হয়নি। তার বদলে আছড়ে পড়ল রাসেল-স্টর্ম। যা আগের চেয়েও আগ্রাসী। আগের চেয়েও মারাত্মক।

শনিবার সকালে কেকেআর সোশ্যাল মিডিয়ায় রাসেলের আগমন বার্তা ঘোষণা করে লিখেছিল, ‘ডেঞ্জ রাস।’ বাস্তবেও যেন সেই ভয়ানক রূপেই ধরা দিলেন ক্যারিবিয়ান তারকা। যা দেখে নাইট শিবিরের কেউ কেউ তাজ্জব। একজন বলছিলেন, ‘যত দিন যাচ্ছে, আরও বিপজ্জনক ব্যাটার হয়ে উঠছে রাসেল। দেখে কে বলবে ৩৬ ছুঁই ছুঁই বয়স!’

প্রতিপক্ষরা শুনছে কি?

(Feed Source: abplive.com)