‘মেরুদণ্ড ও দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে মৃত্যু’? ভোটের মধ্যেই ভাইরাল নির্বাচন কমিশনের Death Certificate

‘মেরুদণ্ড ও দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে মৃত্যু’? ভোটের মধ্যেই ভাইরাল নির্বাচন কমিশনের Death Certificate

নয়াদিল্লি:  প্রকাশ্য জনসভায় সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে ১৭ হাজার ৪০০-র বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। পাশাপাশি, বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কিন্তু এত অভিযোগ সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না, বরং বেছে বেছে বিরোধীদের নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ একাধিক দল। সেই আবহেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কমিশনের ‘মৃত্যুর শংসাপত্র’ ছড়াল, যা মূলত ব্যঙ্গধর্মী পোস্ট (ECI Death Certificate)। কমিশনের জন্য আয়োজিত শোকসভার ছবি এবং ভিডিও-ও সামনে এসেছে, যার সত্যতা যাচাই করে দেখেনি এবিপি আনন্দ। (Election Commission)

লোকসভা নির্বাচনের আগে কমিশনার নিযুক্তিপর্ব থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যকে কমিটিতে বসিয়ে কমিশনার নিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। কমিশনার হওয়ার দৌড়ে কারা এগিয়ে রয়েছেন, সেই নিয়ে বিচার-বিবেচনার সময় পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ কমিটির একমাত্র বিরোধী সদস্য অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এর পর নির্বাচন ঘোষণা থেকে দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণের আগে পর্যন্ত কমিশনের ভূমিকা নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তুলে চলেছেন বিরোধীরা। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। নির্বাচনের মুখে BJP-NIA বৈঠক নিয়ে তথ্যপ্রমাণ সামনে আনলেও কমিশন কেন নীরব, প্রশ্ন তোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। (Lok Sabha Elections 2024)

সেই আবহে কমিশনের ভূমিকায় নিন্দার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘মৃত্যুর শংসাপত্র’ বলে একটি ব্যঙ্গধর্মী নথি ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। কমিশনের সমালোচনা করে ব্যঙ্গধর্মী ওই ‘মৃত্যুর শংসাপত্রে’ রোগীর নাম হিসেবে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের উল্লেখ রয়েছে। কমিশনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা রয়েছে Catatonia। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটি একটি মানসিক রোগ, যাতে অস্বাভাবিক আচরণ করেন রোগী। প্রায় নির্বাকও হয়ে যান কেউ কেউ। ব্যঙ্গাত্মক ওই শংসাপত্রে কমিশনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ওই রোগেরই উল্লেখ করা হয়েছে। কোন কারণে এমন পরিণতি ঘটল, তার ব্যাখ্যা হিসেবে লেখা রয়েছে, ‘বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে অন্ধত্ব’, ‘প্রতিষ্ঠানের গৈরিকীকরণ’, ‘নির্বাচন কমিশনার নিযুক্তি আইন ২০২৩’,  ‘মেরুদণ্ডহীনতা’ । মৃত্যুর স্থান হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক অসুস্থতা কেন্দ্রে’র। শংসাপত্রে স্বাক্ষর হিসেবে লেখা রয়েছে ‘ভারতীয় নাগরিকবৃন্দ’।

কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান তথা রাহুল গাঁধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সঙ্গে যুক্ত থাকা কংগ্রেস নেতা শ্রীবাস্তব সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন লেখেন, ‘২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মৃত্যু হয়েছে বলে পড়ুয়ারা এই পোস্টার টাঙাচ্ছেন। বিজেপি-র ডানহাত হয়ে উঠেছে কমিশন, যাকে পরিচালনা করছেন নরেন্দ্র মোদি। ২০২৪-এর নির্বাচন দেশের সংবিধান এবং গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই। এই লড়াইয়ে ভারত বনাম মোদির লড়াই’।

শ্রীবাস্তবের পোস্ট করা ওই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে ছবিতে একটি স্তম্ভের গায়ে দু’টি পোস্টার দেখা গিয়েছে। একটিতে লেখা রয়েছে, ‘গত ১০ বছরে স্বাধীন সংগঠন, নির্বাচন কমিশনের স্বাস্থ্যের যে অবনতি ঘটছিল লাগাতার এবং সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর, গত ২১ এপ্রিল কমিশনের মৃত্যু হয়েছে বলে দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমরা’।

We students of Delhi University, in law faculty today remembered the demise of Election Commission of India, that was supposed to work transparently and conduct election free and fairly is not doing so it seems it no longer exists in our country. To equal to death of Ele. Comm. pic.twitter.com/sjY85WdDUN

— Abhishek Rai /ابھیشیکرائی (@iamabhiry) April 23, 2024

অন্য একটি পোস্টারে তিন নির্বাচন কমিশনারের ছবির উপর লেখা রয়েছে, ‘স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের প্রয়াণে শোকসভার আয়োজন হচ্ছে’। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিশনের জন্য আয়োজিত শোকসভারও ভিডিও-ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে। ওই ভিডিও-র সত্য়তা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। এখনও পর্যন্ত কমিশনের তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(Feed Source: abplive.com)