কলকাতা: এই ছবি নিয়ে কম লড়াই করতে হয়নি তাঁকে। একে তো কোভিডকালে শ্যুটিং, ছবির মুক্তি পিছিয়ে যাওয়া, তার ওপরে রিলিজ়ের সময় বিগ বাজেট বলিউড ছবির টক্কর.. সব পেরিয়েও দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছিল ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। সেই ছবির মুকুটে এবার নতুন পালক জাতীয় পুরস্কার। ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (70th National Film Awards) -এ সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পেয়েছে ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। এই প্রাপ্তি সবচেয়ে বেশি যাঁর, তিনি ছবির পরিচালক। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Ganguly)। এবিপি লাইভকে জাতীয় পুরস্কারের অনুভূতির কথা বলতে গিয়েও কৌশিকের গলায় শোনা গেল আরজি করের ঘটনা নিয়ে বিষাদের সুর।
কৌশিক বলছেন, ‘জাতীয় পুরস্কার পাওয়া যে কোনও শিল্পীর কাছেই ভীষণ গর্বের। ভীষণ আনন্দের। এত বাংলা ছবির মাঝখানে সেরা বাংলা ছবির পুরস্কার পাওয়া ভীষণ আনন্দের। আমি, আমার প্রযোজক সুরিন্দর ফিল্মস, কাবেরী অন্তর্ধানের গোটা টিম এই পুরস্কার খুবই সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করলাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ খুশি আনন্দ আঢ্য এবং সোমনাথ কুণ্ডুর জন্য। এটা আমার কাছে বিরাট গর্বের। এত কম রিসোর্সের মধ্যেও যখন আমাদের টেকনিশিয়ানরা জাতীয় স্তবে সম্মান অর্জন করতে পারেন, সেটা আমার কাছে ভীষণ গর্বের। নগরকীর্তনের সময়ও দেখেছিলাম। এত কম জিনিস নিয়ে, এত অভাবের মধ্যে কাজ করেও জাতীয় স্তরে বাংলার টেকনিশিয়ানরা যখন দেশের সেরা হয়ে ওঠেন, সেটা গোটা ইন্ডাস্ট্রির কাছে ভীষণ গর্বের। আজকে কাবেরী অন্তর্ধান যে সেরা বাঙালি ছবি হয়েছে, তাতে এই ছবির সঙ্গে যে আড়াইশো মানুষ কাজ করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের অবদান রয়েছে। সবাই সবার সেরাটা না দিলে এই ছবি কখনও সেরার সম্মান পেত না। কাবেরী অন্তর্ধানের পুরস্কার পাওয়ার যে আনন্দ, সেটা আমি বাংলার সমস্ত টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।’
তবে সেই আনন্দের পথেও কাঁটার মতো বিঁধছে আরজি করে চিকিৎসক মৃত্যুর ভয়াবহতা। কৌশিক বলছেন, ‘আমরা বর্তমানে একটা খুব অস্থির রাজনৈতিক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। পর্দায় আমরা এমনই এক অস্থির রাজনৈতিক সময়ের প্রেক্ষাপটে দেখেছিলাম কাবেরী আর নয়নতারা, দুটি মেয়ের গল্প। আর আজ, আরও একটা মেয়ের মর্মান্তিক ঘটনা। আরও একটা অস্থির সময়। এমন একটা সময়ে এই ছবিটা পুরস্কৃত হল, যেন মনে হচ্ছে পর্দায় সেই মেয়েদের গল্পের যন্ত্রণা আর বাস্তবের যন্ত্রণা এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। এমন একটা সময়ে পুরষ্কারটা এসেছে যে আমরা গর্বিত, সম্মানিত হলেও উদযাপন করব না। আমরা নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে কোনও আনন্দ উৎসব করার জায়গায় নেই।
(Feed Source: abplive.com)