৯৭তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের জন্য ‘লাপাতা লেডিস’ ভারতের অফিসিয়াল এন্ট্রি নির্বাচিত হল কিরণ রাও পরিচালিত দ্বিতীয় ফিচার ফিল্ম ‘লাপাতা লেডিজ’। হারিয়ে যাওয়া নারীর কাছে হার উগ্র পৌরুষের! অ্যানিম্যাল নিয়ে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার সঙ্গে প্রকাশ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে ছিলেন কিরণ। তাঁর ছবিতেও বিষাক্ত পৌরুষের গালে সাপটে চড় কষাতে ছাড়েননি পরিচালক।
এদিন ফের অস্কারের দৌড়ে যাওয়ার জন্য অ্যানিম্যাল-সহ তাবড় তাবড় ছবিকে হারিয়ে দিল লাপাতা লেডিজ। প্রাক্তন স্ত্রী তথা বান্ধবী কিরণের সাফল্যে উচ্ছ্বাসিত আমির খান। খুশি কিরণ। নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছেন পরিচালক। কিরণ জানান, ‘আমি গভীরভাবে সম্মানিত এবং আনন্দিত যে আমাদের চলচ্চিত্র লাপাতা লেডিজ অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে ভারতের অফিসিয়াল এন্ট্রি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। এই স্বীকৃতি আমার পুরো টিমের অক্লান্ত পরিশ্রমের একটি প্রমাণ, যাদের আবেগ এই গল্পটিকে জীবন্ত করে তুলেছে। হৃদয়কে সংযুক্ত করতে, সীমানা অতিক্রম করতে এবং অর্থপূর্ণ কথোপকথনকে প্রজ্বলিত করার জন্য সিনেমা সর্বদা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আমি আশা করি এই ছবিটি ভারতের মতো বিশ্বজুড়ে দর্শকদের কাছে অনুরণিত করবে’।
বলিউড হিট অ্যানিম্যাল, মালয়ালম জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী আট্টাম এবং কান বিজয়ী অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট সহ ২৯টি চলচ্চিত্রের তালিকা থেকে পিতৃতন্ত্রের গালে সপাটে চড় মারা এই ছবিকে বেছে নেন জুরিরা। কিরণ রাও আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচক কমিটি এবং যারা এই ছবির ওপর আস্থা রেখেছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।এ বছর এমন দুর্দান্ত ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে থেকে নির্বাচিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটি দুর্দান্ত সুযোগ – যারা এই সম্মানের জন্য সমানভাবে যোগ্য দাবিদার।’
আমির খানের বিবৃতি
বিয়ে ভাঙলেও পরিচালক কিরণে আমিরের আস্থা বরাবরই অটুট। এই ছবির প্রযোজক হিসাবে পাশে ছিলেন আমির। ছবির জন্য অডিশন দিয়েও ব্যর্থ হন তিনি। ছবির সাফল্য়ে এদিন আমির লিখেছেন, ‘আমরা সবাই এই খবরে খুব খুশি। আমি কিরণ এবং তার পুরো টিমের জন্য গর্বিত। আমি ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার নির্বাচক কমিটিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা অস্কারে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমাদের চলচ্চিত্রকে বেছে নিয়েছে। আমাদের দর্শক, আমাদের মিডিয়া এবং পুরো চলচ্চিত্র জগতের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, তারা লাপাতা লেডিসকে যে সমস্ত ভালবাসা এবং সমর্থন দিয়েছেন। জিও এবং নেটফ্লিক্স উভয়কেই ধন্যবাদ যারা কাজ করার জন্য দুর্দান্ত অংশীদার হয়েছে। আমি খুব খুশি যে আমাদের সমস্ত কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। ধন্যবাদ সবাইকে (হাত জোড় করে ইমোজি) আশা করছি লাপাতা লেডিজ একাডেমির সদস্যদের মন জয় করতে সক্ষম হবেন।’
এর আগে আমিরের প্রযোজনা সংস্থায় তৈরি ‘লগান’ (২০০১) ও তারে জমিন পার (২০০৭) অস্কারে ভারতের অফিসিয়াল এন্ট্রি হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। তবে, লগান একমাত্র ভারতীয় চলচ্চিত্র যা ৭৪তম একাডেমি পুরষ্কারে (২০০২) শীর্ষ পাঁচটি মনোনয়নের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে পুরস্কার হাতছাড়া হয়। লাপাতা লেডিজ আমিরের হোম ব্যানার থেকে তৃতীয় চলচ্চিত্র যা অস্কারের জন্য ভারতের অফিসিয়াল এন্ট্রি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে।
লাপাতা লেডিজ সম্পর্কে
লাপাতা লেডিজ ২০০১ সালে গ্রামীণ ভারতের প্রেক্ষাপটে তৈরি দু’জন কনের গল্প। যাঁরা ট্রেনে চড়ে প্রথমবার শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে, ঘোমটায় ঢাকা সেই কনেদের চেনা দায়! ট্রেন যাত্রার সময় দুর্ঘটনাক্রমে অদলবদল হয়ে যায় দুই কনে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে সর্বজনীন প্রশংসা পেয়েছে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীতনশি গোয়েল, প্রতিভা রান্তা এবং স্পর্শ শ্রীবাস্তব, পাশাপাশি রবি কিষাণ, ছায়া কদম এবং গীতা আগরওয়াল শর্মা।
(Feed Source: hindustantimes.com)