
‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। বিবেক রঞ্জন অগ্নিহোত্রীর এই ছবি মুক্তি পেতে চলেছে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। শনিবার এই ছবির ট্রেলার লঞ্চ ছিল কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে। আর সেখানেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ট্রেলার লঞ্চের আগের দিন এবিপি আনন্দকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন পরিচালক। তাঁর আসন্ন ছবি, তাকে ঘিরে বিতর্ক- এই সবকিছু নিয়ে কী কী বললেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী?
সঞ্চালক (দীপক ঘোষ) – যে ইতিহাস মানুষ ভুলতে চায়, পড়তে চায় না, তা সামনে আনার কথা কেন মনে হল?
বিবেক – এই কারণেই মনে হয়েছে যে, আমি যখন বড় হচ্ছিলাম তখন আমায় সঠিক ইতিহাস বলা হয়নি। আমি যখন বড় হচ্ছিলাম তখন মনে হত যে দেশভাগের পুরোটাই পঞ্জাবে হয়েছে। ভারতবর্ষের বেশিরভাগ লোক এটা জানেনই না যে, দেশভাগের সময় সবচেয়ে বেশি বলিদান তো বাংলা দিয়েছে। পুরো প্লে গ্রাউন্ড, কুরুক্ষেত্রই তো ছিল বাংলা। এই রাজ্যের সরকার বলে কাশ্মীর ফাইলস প্রোপাগান্ডা ছবি। ৫ লক্ষ কাশ্মীরি হিন্দু যে ঘরছাড়া হয়েছিলেন তা প্রোপাগান্ডা? পহেলগাঁওতে হিন্দুদের উপর যে হামলা হয়েছে, তা নিয়ে ২০-২৫ বছর পর অন্য কোনও বিবেক অগ্নিহোত্রী ছবি বানালে সেটা প্রোপাগান্ডা হবে? আর একটি রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী যিনি সংবিধানের শপথ নিয়েছেন, ওনার এটা বলার অধিকার কী করে আছে যে, এটা প্রোপাগান্ডা? এগুলো কী মিথ্যে? মুর্শিদাবাদে যা হয়েছে সেটা মিথ্যে? আর জি করে যে অসহায় তরুণীর মৃত্যু হয়েছ, যা ঘটেছে তা মিথ্যে? আগামী দিনে কেউ এই নিয়ে সিনেমা বানালে সেটাকে প্রোপাগান্ডা বলবেন?
সঞ্চালক – আপনি নিজে বলেছেন আপনি মোদির সমর্থক, আগের বছর একটি রাজনৈতিক দলের শোভাযাত্রায় আপনাকে দেখা গিয়েছে, তাই আপনি এখন যাই করবেন সেটা আতসকাচের তলায় রাখা হবে, এটা আপনি মানেন?
বিবেক – নিজের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করা কি ভুল? আমি আজ অবধি বিজেপিকে সমর্থন করিনি। আমি বলেছি নরেন্দ্র মোদি ভাল প্রধানমন্ত্রী। আমার ভাল লাগে। এটা ভুল? আর এখানকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবাই যে তৃণমূল সদস্য সেটা ঠিক? এখানকার সিনেমা জগতের লোক তো তৃণমূলের লোকসভা সাংসদও, সেটা ঠিক ব্যাপার?
সঞ্চালক – ৬ মাস পরে ভোটের ঘোষণা, তার আগে সিনেমার মুক্তি, প্রশ্ন তো উঠছেই
বিবেক – আমরা যদি ভোটের আগেই করার হতো, তাহলে তো জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে সিনেমা রিলিজ করতাম, যখন ভোটের প্রচার চলত। এখন তো বিহারে ভোট। ওখানে তো কেউ কিছু বলছে না। ভারতে যখনই কোনও সিনেমা রিলিজ করবেন, কোনও না কোনও না ভোট চলবে। এখানকার শাসকদলের ভয় আছে যে এই একটা সিনেমা তাদের ভোটে প্রভাব ফেলবে।
সঞ্চালক – আপনার মতে কেন এত বিতর্ক হচ্ছে
বিবেক – ওনারা করছেন। ওনারা বলছে এই সিনেমা রিলিজ হতে দেবেন না। একটা বড় সিনেমা হলে এই ছবির ট্রেলার লঞ্চ হওয়ার কথা ছিল। জানতে পারছি রাজনৈতিক চাপে তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
সঞ্চালক – এই সিনেমা সেনসর বোর্ডে পাশ করেছে, আপনিও সেনসর বোর্ডের সদস্য
বিবেক – তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। অন্য একজনকে যতটা লড়তে হয়, আমাকেও ততটাই লড়তে হয়।
সঞ্চালক – বাংলা নিয়ে সিনেমা, গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে সিনেমা তৈরির ইচ্ছে রয়েছে
বিবেক – গুজরাত নিয়ে অনেক ছবি হয়ে গিয়েছে। নতুন কিছু বলার নেই। যে বিষয়ে আমি ছবি বানিয়েছি সেটা নিয়ে এখনও কোনও সিনেমা তৈরি হয়নি। আমি সেই বিষয়েই সিনেমা তৈরি করি, যা নিয়ে আগে কোনও ছবি বানানো হয়নি এবং আগামী ৫০ বছরেও কেউ বানাবে না। ৫ বছর গবেষণা করেছি এই ছবিটা নিয়ে। ১৮ হাজার পাতার শুধু সামারি রয়েছে রিসার্চ পেপারের। আমি এখানকার রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এই সিনেমা দেখার পর সেটাকে উদযাপন করুন এবং ‘বুচার অফ বেঙ্গল’ – সুরাবর্দি অ্যাভিনিউ রয়েছে তার নাম বদলে গোপাল মুখোপাধ্যায় অ্যাভিনিউ রাখুন।
(Feed Source: abplive.com)
