
নয়াদিল্লি: আমেরিকার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবার ভারতকে পাশে চাইল চিন। আমেরিকাকে সরাসরি ‘গুন্ডা’ বলে উল্লেখ করল বেজিং। তাদের দাবি, শুল্কমুক্ত বাণিজ্যে এতদিন আমেরিকাই সবচেয়ে লাভবান হয়েছে। এখন শুল্কের গাজর ঝুলিয়ে বাকিদের ভয় দেখাচ্ছে তারা। এমতাবস্থায় নীরব থাকলে চলবে না বলে ভারতকে পরামর্শ দিল তারা। পাশে থাকার আশ্বাসও দিল। (India-China Relations)
রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর দু’দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতকে তেল বিক্রির টাকাতেই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ভারত সেই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মদত জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এমনকি আরও কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। (US Tariff on India)
শুল্ক নিয়ে চিনের সঙ্গেও এই মুহূর্তে বোঝাপড়া চলছে আমেরিকার। সেই আবহেই ভারতের পাশে দাঁড়ালেন চিনের রাষ্ট্রদূত শু ফিহং। তাঁর বক্তব্য, “শুল্কমুক্ত বাণিজ্যে বহুকাল ধরে লাভবান হয়ে আসছে আমেরিকা। এখন তারাই আবার শুল্ককে হাতিয়ারে পরিণত করেছে। একাধিক দেশের কাছ থেকে অত্যধিক শুল্ক দাবি করছে ওরা। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে, আরও চাপানোর হুমকিও দিয়েছে। এতে তীব্র আপত্তি জানাচ্ছে চিন। এই ধরনের আচরণে দেখে চুপ থাকলে গুন্ডাদের সাহস আরও বেড়ে যাবে। বহুমুখী বাণিজ্য ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের পাশেই থাকে চিন।”
#WATCH | China’s ambassador to India, Xu Feihong says, “…We welcome all Indian commodities to enter the Chinese market…” pic.twitter.com/YsyPTHBh8O
— ANI (@ANI) August 21, 2025
ভারতের জন্য নিজেদের চিনের বাজার খুলে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন শু। তিনি বলেন, “চিনের বাজারে আরও বেশি ভারতীয় পণ্যকে স্বাগত জানাব আমরা। তথ্যপ্রযুক্তি, সফ্টওয়্যার, বায়োমেডিসিনে ভারতের অবস্থান ভাল। বৈদ্যুতিন সামগ্রী উৎপাদন, পরিকাঠামো এবং শক্তি উৎপাদনে অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছে চিন। ”
শু জানিয়েছেন, পড়শি দেশ হিসেবে ভারত এবং চিনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্কের উন্নতি চান তাঁরা। ভারত চিনের বাজারে বিনিয়োগ করুক, চিনও ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করবে। তাঁর কথায়, “চিন অবশ্যই চাইবে যে ভারতীয় সংস্থাগুলি সেখানে বিনিয়োগ করুক। ভারতের বাজারে চিনকেও ন্যায্য, পক্ষপাতমুক্ত সুযোগ দেওয়া হবে বলে আশা করছি। এতে দুই দেশই লাভবান হবে।”
ভারতের উপর দুই দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা, যা কার্যকর হবে আগামী ২৭ অগাস্ট থেকে। সেই আবহে চিন তো বটেই, রাশিয়াও ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় পণ্যের জন্য নিজেদের বাজার খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাশিয়াও। তবে চিনের এই ঘোষণা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘাতের ইতিহাস দীর্ঘ। এর দরুণ কয়েক বছর আগেই ভারতে চিনা পণ্য বয়কটের হিড়িক দেখা গিয়েছিল। তাই বৈরিতা ভুলে পরস্পরের ব্যবসায়িক স্বার্থকে দুই দেশ গুরুত্ব দেয় কি না, সেদিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
(Feed Source: abplive.com)
