গত শনিবার অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও শেয়ার করেছেন যা দেখে উল্কাপাত বলে মনে হয়। সারা আকাশ জুড়ে লাল, নীল এবং হলুদের অত্যাশ্চর্য বর্ণময় মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করেছেন মানুষ। সাময়িক ভাবে ওই বর্ণচ্ছটা দেখে আলোর রোশনাই মনে হলেও আসলে সেগুলি একটি চিনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ। ওই রকেটের ধ্বংসাবশেষগুলি ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে চালিত হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
পিপলস রিপাবলিক অফ চায়নার (People’s Republic of China) USSPACECOM কেন্দ্র নিশ্চিত করেছে যে, লং মার্চ 5B (CZ-5B) গত মাসের ৩০ তারিখে ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে পুনরায় পৃথিবীতে প্রবেশ করেছে। ওই রকেটটির পুনঃপ্রবেশের কারণে আকাশপথে রকেটের প্রযুক্তিগত কিছু ধ্বংসাবশেষের বিচ্ছুরণ দেখা গিয়েছে। এর প্রভাবের অবস্থান এবং ধ্বংসাবশেষের বিচ্ছুরণ নিয়ে ইউএস স্পেস কমান্ড একটি ট্যুইটও করেছে।
গত শনিবারই পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হাজার হাজার মানুষ রাতের আকাশ জুড়ে এক লোভনীয় বর্ণচ্ছটার সমাবেশ লক্ষ্য করেছে। অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীই এর ভিডিও শেয়ার করে একে উল্কাপাতের ঝরনা বলে তকমা দিয়েছেন। অন্য দিকে, মহাকাশচারী এবং বিজ্ঞানীরা দ্রুত এই ধ্বংসাবশেষকে দূর করতে যথাসম্ভব কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিলেন।
নাসার মহাকাশচারী ক্রিস হ্যাডফিল্ড (Chris Hadfield) ট্যুইট করে জানিয়েছেন যে, ‘খুব সম্ভবত চিনের রকেটটি এইমাত্র মালয়েশিয়ার উপর দিয়ে বাহিত হয়ে গিয়েছে, আপনার অপেক্ষা করে দেখুনন কী বড় বড় টুকরো পৃথিবীতে ছিটকে পড়তে চলেছে’। চায়না ম্যানড স্পেস এজেন্সি (সিএমএসএ) অনুসারে, চিন ২৪ জুলাই ২৩ টন লং মার্চ-৫বি ওয়াই ৩ ক্যারিয়ার রকেটটি আকাশে নিক্ষেপ করেছিল।
কার্যত আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতেই নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন (Bill Nelson) চিনকে তুলোধনা করেছে নিজেদের অকর্মণ্যতার জন্য। রকেটের ধ্বংসাবশেষকে সঠিক ভাবে পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার জন্য অনেকেই চিনের প্রতি বিরূপ হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে, ‘সমস্ত দেশেরই স্পেসফেয়ারিং প্রতিষ্ঠিত নির্দেশনাগুলি মেনে চলার চেষ্টা করা উচিত। বিশেষ করে লং মার্চ 5B-এর মতো ভারী-লিফ্ট রকেটের জন্য এই ধরনের নির্দেশনা আরও বেশি কার্যকর হওয়া উচিত’। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীতে বসবাসকারী সাধারণ জনজীবনের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই ধরনের স্পেসফেয়ার চালানো উচিত যাতে এখানকার জনজীবন কোনও ভাবেই বিঘ্নিত না হয়।‘