#বোলপুর: অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা ও প্রয়াত স্ত্রীর নামে থাকা সম্পত্তির তথ্য হাতে রয়েছে। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের ‘বেনামে’ কত সম্পত্তি রয়েছে তার হদিস পেতে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর এই সকল বেনামী সম্পত্তির খোঁজে এ বার বীরভূমের অন্যতম গরু ব্যবসা সঙ্গে যুক্ত আব্দুল লতিফকে হাতে পেতে চাইছেন তদন্তকারী গোয়েন্দারা, দাবি সিবিআইয়ের।
সিবিআই সূত্রে খবর, এই সকল বেনামী সম্পত্তির হদিস দিতে পারেন এই আব্দুল লতিফ। সিবিআইয়ের দাবি, যে তথ্য সামনে এসেছে তাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গরু পাচার থেকে আসা লাভের টাকার যে ভাগ অনুব্রত মণ্ডলের জন্য বরাদ্দ থাকত, তা অনেক সময় নিজের হাতে নিতেন না অনুব্রত মণ্ডল। আব্দুল লতিফ মারফত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেই টাকা লগ্নি হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এমনকি অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে জেরা করেও এই সকল বিনিয়োগের কথা জানা গিয়েছে বলে দাবি করছে সিবিআই। তাই বেনামে কোথায় কত বিনিয়োগ হয়েছে, জানতে এই আব্দুল লতিফকে হাতে পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে দেওয়া গরু পাচার মামলায় দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে আব্দুল লতিফের নাম রয়েছে। তাতে গরু পাচার ও লাভের টাকা কীভাবে আব্দুল মারফত প্রভাবশালীদের কাছে গিয়েছে তা উল্লেখ রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ মেনেই আব্দুল লতিফ অনুব্রতর হয়ে সরাসরি বিনিয়োগ করেছেন। তাই জেরা পর্বে অনুব্রত মণ্ডল যখন পুরোপুরি চুপ, তখন বেনামী সম্পত্তির হদিস পেতে আব্দুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শ্রেয় বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। চার্জশিটে নাম থাকলেও এখনও পর্যন্ত আব্দুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠতে পারেনি সিবিআই। তাই এই মুহূর্তে আব্দুলের বয়ান হয়ে উঠতে পারে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থার ট্রাম কার্ড।
কে এই আব্দুল লতিফ?
সূত্রের খবর, ইলামবাজারের বেলোয়া গ্রামে আদি বাড়ি এই লতিফের। পারিবারিক সূত্র ধরেই গরু ব্যবসার সঙ্গে যোগ আব্দুল লতিফের। পরবর্তীতে বীরভূম জেলার ইলামবাজার-সহ বিভিন্ন স্থানের পশুহাটের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ চলে আসে এই আব্দুল লতিফের হাতে। প্রথমে এনামুল হকের এক কর্মী হয়ে বীরভূম জেলাকে গরু পাচারের করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে সাহায্য করা ও পরবর্তীতে নিজেই এনামুলের অন্যতম পার্টনার হয়ে ওঠেন তিনি। চার্জশিটে নাম থাকলেও এখনও সিবিআইয়ের হাতে অধরা এই লতিফ শুধু গরুর ব্যবসা নয় এলাকায় একাধিক মার্বেল ব্যবসার সাথেও যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। এই ব্যবসা গুলি তো গুরু পাচারের থেকে আসা লাভের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে বলে দাবি করছে সিবিআই ।
কীভাবে যোগ অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে?
সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের সূত্র ধরেই যোগাযোগ হয় অনুব্রত ও আব্দুলের। এমনকি সায়গল হোসেন মারফত অনুব্রত নির্দেশ পৌঁছে যেত এই আব্দুল লতিফের কাছে, দাবি গোয়েন্দাদের। এনামুল হক ও আব্দুল লতিফ দুজনেই বীরভূমকে গরু পাচারের সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহারের জন্য অনুব্রত মণ্ডলের কাছে পৌঁছে দিতেন নগদ টাকা সেই তথ্য হাতে রয়েছে তদন্তকারীদের।
Amit Sarkar