খিদিরপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নেপথ্যে কারণ কী?‌ উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

খিদিরপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নেপথ্যে কারণ কী?‌ উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

শনিবার রাত ৯টা নাগাদ খিদিরপুরের দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার রিমাউন্ট রোডে উল্টে যায় সার বোঝাই একটি ট্রাক। ট্রাকের চাপে একেবারে পিষে যায় একটি ছোট গাড়ি। সেই ছোট গাড়িতে করেই যাচ্ছিলেন ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ রাম প্যায়ারে রামের ছেলে রামকিঙ্কর রাম। ট্রাক চাপা পড়ায় দুমড়ে মুচড়ে যায় গাড়িটি। গ্যাসকাটার দিয়ে গাড়ি কেটে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তারপর এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন রামপেয়ারি রামের পুত্র রামকিঙ্কর রামকে (৩৮)।

কিন্তু কেন এমন দুর্ঘটনা ঘটল?‌ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে। এক, কাউন্সিলরের ছেলের গাড়িটি ওভারটেক করতে উদ্যত ছিল। জায়গা বেশি না পেয়েও সেখান দিয়ে যেতে যায়। আর তখনই ট্রাক চালক নিজেকে সামাল দিতে না পেরে উলটে পড়ে গাড়ির উপর। তার জেরে কার্যত চিঁড়েচ্যাপ্টা হয়ে যায় গাড়িটি। দুই, মুষলধারে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে বন্দর এলাকার ওই রাস্তা। এমনকী সেখানে ওই সময় জল জমে ছিল। তার জেরে ট্রাকটি পিছলে যায়। আর মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। তিন, রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা থাকায় ট্রাকের চাকা তার মধ্যে পড়ে এবং উলটে যায়। তখন রামকিঙ্করের গাড়ি পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। চার, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার দু’ধারে জ্বলে না বাতিস্তম্ভ। তার সঙ্গে রাস্তার অবস্থাও বেহাল। এই পরিস্থিতিতে ট্রাকের রাস্তা বুঝতে না পারা এবং গাড়ির ওভারটেক করার চেষ্টা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, একবছর আগে এই রাস্তা মেরামত হয়েছিল। কিন্তু পাঁচদিনের মাথায় আবার কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়ে। এমনকী সব পিচ উঠে গিয়ে ফের বেরিয়ে আসে রাস্তার কঙ্কালসার দশা। আর মেরামতি করা নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে দ্বন্দ্ব লাগে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের। সুতরাং বেহাল রাস্তাই পড়ে থাকে। ট্রাকে প্রচুর সারের বস্তা বোঝাই করা ছিল। যার জেরে টাল সামলাতে পারেনি ট্রাকটি। যার জেরে উল্টে যায়।

ঠিক কী বলেছেন মেয়র?‌ রাতে ঘটনাস্থলে আসেন ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) সুনীলকুমার যাদব এবং ডেপুটি কমিশনার (বন্দর) জাফর আজমল কিদোয়াই–সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। খবর দেওয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে। গাড়ির নম্বর প্লেট চিহ্নিত হতেই জানা যায়, তিনি রামপেয়ারি রামের পুত্র। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান বর্তমান। সতীর্থ কাউন্সিলরের ছেলের অকালমৃত্যুর ঘটনা শুনে ছুটে আসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‌সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই। রামকিঙ্কর বাড়ি ফেরার জন্য বন্দর এলাকার ভিতর একটা শর্টকার্ট রাস্তা ধরেছিলেন। সেখান দিয়ে যাওয়ার পথেই এই মর্মান্তিক পরিণতি।’‌