জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ডেস্ক: সময় পাল্টাচ্ছে। কুসংস্কারকে এখনও পুরোপুরি ছাপিয়ে যেতে পারেনি সমাজ। তবে মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে সচেতনতা। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বর্তমান প্রজন্ম অনেকটাই ‘ওপেন মাইন্ডেড’। লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ কিছুই তারা মানে না। ভালবাসার হলে যাকে খুশি প্রাণ খুলে ভালবাসছে বর্তমান প্রজন্ম। তেমনই সচেতন হচ্ছে সমাজের অন্যান্য দিক থেকেও। এখন বিয়ের আগেই সন্তানের সুস্থতার দিক বিবেচনা করে দেখে নেওয়া হচ্ছে। করিয়ে নেওয়া হচ্ছে থাইরয়েড টেস্ট। এখন কোন দম্পতির সন্তান ধারণে সমস্যা (infertility) হলে তার দোষ শুধুমাত্র মহিলার হয় না। বরং চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বার করা হচ্ছে। সূত্র অনুসারে, গত চার দশকে ৫০ লক্ষেরও বেশি শিশু টেস্টটিউবের (Test-Tube Baby) মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখছে। এমনকি বর্তমানে আগের চেয়ে সংখ্যায় বেশি মানুষ চিকিৎসা করাতে আসছেন বলে চিকিৎসার খরচও কমছে। কিন্তু আজও বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণের চিকিৎসা বহু মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের হাতের নাগালের বাইরে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানের একটি চমৎকার আবিষ্কার আশা জাগাচ্ছে মধ্যবিত্তদের মনে।
বিজ্ঞানীরা একপ্রকার প্রোটিন আবিষ্কার করেছেন যা শুক্রাণু-ডিম্বাণুর পুষ্টির পাশপাশি নিষেকের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারবে। প্রোটিনটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মাইয়া’। গ্রিসের মাতৃত্বের দেবীর নাম অনুসারে এই প্রোটিনের নামকরণ করা হয়েছে।সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে গ্যামেট ফিউশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বিজ্ঞানীরা একপ্রকার প্রোটিন-৩ ধরণের রিসেপ্টার এফসি আবিষ্কার করেছেন, যা নিষেকের সময় ডিস্বাণু যে স্পার্মটির সাহায্যে নিষিক্ত হতে চাইছে সেই স্পার্মের প্রোটিনের সাথে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ হতে সাহায্য করে। এই আবিষ্কারটি বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হিসেবে প্রমাণিত হতে চলেছে।
কমরস্কভা জানিয়েছেন, ’এটি প্রায় দু’দশকের গবেষণার ফলাফল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানসহ প্রায় ১৭ টি অনুষঙ্গের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ফলাফল হচ্ছে এই প্রকাশনা’। এই গবেষণাটি প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়য়ে হ্যারি মুরের ল্যাবে শুরু হয়েছিল। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, এই পরীক্ষা করার জন্য তাঁদের নানান চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এইপ্রকার প্রোটিন যেহেতু শুধুমাত্র মানুষের দেহেই পাওয়া যায় সেহেতু পরীক্ষা করার জন্য তাঁদের সম্মতি পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি গবেষণাটি পুরোপুরিই মানুষের শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর উপরই করা হয়েছে।