বিকল্প চাষ হিসেবে বিঘা বিঘা জুড়ে হচ্ছে আমপাতা চাষ, বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়!

বিকল্প চাষ হিসেবে বিঘা বিঘা জুড়ে হচ্ছে আমপাতা চাষ, বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়!

উত্তর ২৪ পরগনা:  গ্রীষ্মের ফলের মধ্যে আমের চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির আম মেলে এই সময়ে। গোলাপখাস, ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ-সহ আরও নানান প্রজাতির। দামও থাকে বেশ চড়া। ফলে আম চাষ করে অনেকটাই লাভের মুখ দেখেন আম চাষিরা। তবে এবার আম নয়, আমপাতা বিক্রি করেই ঘরে মুনাফা তুলছেন কৃষকরা। পুজো পার্বণে আম পাতার অর্থাৎ আমের পল্লবের চাহিদা বেশ ভালই থাকে। যা বিক্রি করে রীতিমতো লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

চাষি নিজের পরিবারের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পরিবারের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন এই ভিন্ন প্রকৃতির চাষের মাধ্যমে।এ বছর দক্ষিণবঙ্গে আমের ফলন বেশ ভালই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম সাধারণত এক বছর প্রচুর ফলন ধরে গাছে, পরের বছর ফলন কম হয়। এ বছর আমগাছের ‘অন ইয়ার’ চলছে।

আমের ফলন হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আমের বাজার বেশ চড়া। আমের ফলন যাই হোক, অনেক কৃষক আছেন যারা আম গাছের পাতা বিক্রি করে প্রচুর টাকা লাভ করছেন। পুজো পার্বনে আম পাতার প্রচুর চাহিদা। তবে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের আম গাছের জাত রয়েছে যে গাছে শুধুমাত্র আম পাতা বিক্রি করার জন্যই চাষ করা হয়।

আমের পল্লব বিক্রির উদ্দেশ্যে উত্তর ২৪ পরগনার সাতপুর মছলন্দপুরের বাসিন্দা দীপক কুমার রায় কয়েক বিঘা জুড়ে চাষ করছেন আম গাছের। বিগত ছয় বছর ধরে এই চাষ করছেন বলে জানান তিনি। চাষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় জৈব সার ও ভার্মি কম্পোস্ট। দীপক রায় জানান যে এই চাষের মাধ্যমে বছরে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাভ হয় তাঁর। মূলত সুবর্ণরেখা জাতের আম গাছ রোপনের মধ্যে দিয়েই এই চাষ করা হয়।

গাছগুলির উচ্চতা রাখা হয় পাঁচ থেকে সাড়ে ৫ পাঁচ ফুট। এক বিশেষ পদ্ধতিতে তোলা হয় আমের পল্লব। এরপর বান্ডিল তৈরি করা হয়। আমের পাতা তোলা হলে তা চলে যায় স্থানীয় বাজার-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। একবার গাছ লাগালে প্রায় কুড়ি বছর তা থেকে পাতা তোলা সম্ভব বলে জানান চাষি। এই চাষে বছরে মাত্র কুড়ি হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে এই চাষ দিশা দেখাচ্ছে সাফল্যের।

অনেক চাষি এখন ঝুঁকছেন এই আমের পল্লব চাষের দিকে।শুধু তাই নয়, আমের পাতা শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন এবং গ্লুকোজ বিতরণকেও উন্নত করে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এগুলি ফাইবার, পেকটিন এবং ভিটামিন সি-এর একটা ভাল উৎস৷ এগুলি ডায়াবেটিস রোগী এবং যাদের উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের জন্যও উপকারী৷ আমের পাতা বিশ্বের অনেক জায়গায় রান্না করেও খাওয়া হয় বলেও জানা যায়। সব মিলিয়ে আম নয়, পাতা বিক্রি করেই মুখে হাসি ফুটছে কৃষকদের।

(Feed Source: news18.com)