অস্ট্রেলিয়ার বিচে রহস্যজনক সিলিন্ডার! ডাকা হল সেনা, ইসরোর রকেটের টুকরো?

অস্ট্রেলিয়ার বিচে রহস্যজনক সিলিন্ডার! ডাকা হল সেনা, ইসরোর রকেটের টুকরো?

মেলবোর্ন: সৈকতের (Western Australia Beach) বিশাল অংশ জুড়ে ওটা কী? প্রথমে বুঝতে পারেননি স্থানীয়রা। কাছে গেলে মালুম হয়, বিষয়টি একটি দৈত্য়াকার ধাতব সিলিন্ডার (Metal Cylinder)। এই জিনিস অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে এল কী ভাবে? শুরু হয়ে যায় কৌতূহলী উুঁকিঝুঁকি। স্থানীয়দেরই কেউ পুলিশ স্টেশনে খবর দিয়েছিলেন। তদন্ত শুরু করেন তাঁরা। তখন থেকে জল্পনা শুরু, ভারতের মহাকাশযানের অংশ নয়তো এটি? কিন্তু এই জিনিস ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ‘জুরিয়েন বে’-তে এল কী ভাবে? এই জল্পনার মধ্যেই স্পেস আর্কিওলজির বিশেষজ্ঞ, অ্যালিস গোরম্যান (Alice Gorman) মন্তব্য করেন, এটি ইসরো-র (ISRO) পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল রকেটের তৃতীয় পর্যায়ের খণ্ডাংশ। রহস্যজনক বস্তুটি ঠিক কী বুঝতে সাহায্য় করছে সেনাও।

জল্পনার জাল…
তামার রংয়ের দৈত্য়াকার সিলিন্ডারটির হাল বেশ খারাপ। এককথায় বেশ ক্ষতিগ্রস্ত সেটি। একদিকে বেঁকে রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ মোটামুটি একথা জানিয়ে দিয়েছে যে, এটি কোনও বাণিজ্যিক বিমানের অংশ নয়। কিন্তু কোথা থেকে এল, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ছিলেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে তাই এটিকে ‘বিপজ্জনক বস্তু’ হিসেবে ধরে নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। তবে অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় অনুযায়ী সোমবার রাতে পুলিশের তরফে জানানো হয়, দমকল বিভাগের রসায়ন দফতর বস্তুটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। এবং সেই পরীক্ষালব্ধ ফলাফল জানাচ্ছে, এই ধাতব সিলিন্ডার নিরাপদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনও ক্ষতির আশঙ্কাও নেই এই পদার্থ থেকে। তবে এখনও পর্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ভাবে বস্তুটির উৎস এবং পরিচয় জানা যায়নি। সেই কাজ হলেই সৈকত থেকে সরানো হবে রহস্যময় ধাতব সিলিন্ডারটিকে। সে জন্য আপাতত নিরাপত্তার স্বার্থে, সাধারণ বাসিন্দাদের এই বস্তু থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। গোরম্যানের দাবি, পুলিশ একদম ঠিক করেছে। তাঁর কথায়, ‘রকেট জ্বালানির বড় অংশ বিষাক্ত হয়ে থাকে। যদিও এই টুকরোটি বেশ কিছু দিন ধরে ওই চত্বরে পড়ে রয়েছে, তাতেও এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না রকেটের ওই অংশটির মধ্যে যা রয়েছে তা নিরাপদ।’ তবে গোরম্যানের ধারণা, সম্ভবত আগের দশকের কোনও একটি উৎক্ষেপণের সময় ওটি ভেঙে পড়ে।

কী দেখা যাচ্ছে?
সোশ্য়াল মিডিয়ায় বস্তুটির যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এটি বেশ কিছুটা হেলে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকটা অংশ। প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হবে, যেন কিছু একটা থেকে আলাদা হয়ে এসে পড়েছে এটি। প্রথমে জল্পনা ছড়িয়েছিল, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমান MH370-র অংশ নয়তো এটি? ২০১৪ সালের মার্চে রহস্যজনক ভাবে গায়েব হয়ে গিয়েছিল বিমানটি। ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অংশ তোলপাড় করে খোঁজ চালিয়েও তার কোনও সন্ধান মেলেনি। বস্তুত, এখনও পর্যন্ত শতাব্দীর অন্যতম বড় রহস্য হয়ে থেকে গিয়েছে এটি। কিন্তু ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ জানায়, এরকম কোনও সম্ভাবনা নেই। পরে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সির তরফে বলা হয়েছে, ‘বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। বিদেশের কোনও মহাকাশযানের অংশ ভাসতে ভাসতে সৈকতে চলে এসেছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখতে সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’

(Feed Source: abplive.com)