‘অনির্বাণের চরিত্রের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে’, প্রবীর-পোদ্দার জুটিকে ফেরাতে তৈরি সৃজিত?

‘অনির্বাণের চরিত্রের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে’, প্রবীর-পোদ্দার জুটিকে ফেরাতে তৈরি সৃজিত?

তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা:  ছবি মুক্তির রাতেই তিনি বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন পরিবারের সঙ্গে। তারপরেই তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, সফরনামা। কখনও তিনি সমুদ্রের ধারে, কখনও আবার হ্যারি পটারের দেশে। পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে, জমিয়ে সময় কাটাচ্ছেন ‘দশম অবতার’ (Dawshom Awbotaar)-এর পরিচালক। ছবির সাফল্যে খবর কতটা পৌঁছেছে তাঁর কাছে? খোঁজ নিতে, সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে (Srijit Mukherji) ফোন করল এবিপি লাইভ (ABP Live)।

প্রশ্ন: বিদেশ সফরে সময় কেমন কাটছে?

সৃজিত মুখোপাধ্যায়: দুর্দান্ত। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সদ্য হ্যারি পটার ওয়ার্ল্ড থেকে ঘুরে এলাম। (সৃজিত যে পটারহেড, সেটা পরিচালককে যাঁরা কাছের থেকে চেনেন, তাঁরাই জানেন)। আমার নতুন ছবি, মৃণাল সেনে বায়োপিক ‘পদাতিক’-এর স্ক্রিনিং রয়েছে লন্ডনে। সেটার জন্য লন্ডনে যাব।

প্রশ্ন: ওই দেশ পর্যন্ত ‘দশম অবতার’-এর সাফল্যের খবর পৌঁছল?

সৃজিত: (একটু হেসে) ‘দশম অবতার’-এর ব্যবসা, পুজোয় মুক্তি পাওয়া ছবির মধ্যে যে সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেছে, দর্শকদের প্রতিক্রিয়া.. সব খবরই পাচ্ছি। দর্শকদের ঠিক কোন কোন দৃশ্য ভাল লেগেছে, এমনকি কী কী খারাপ লেগেছে তাও জানতে পারছি। সবচেয়ে বড় কথা.. মানুষের প্রবীর-পোদ্দার জুটিকে ভীষণ মনে ধরেছে। মানুষ আবার এই জুটিকে দেখতে চাইছেন।

প্রশ্ন: তাহলে প্রবীর-পোদ্দারকে নিয়ে নতুন ছবির পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে?

সৃজিত: প্রবীর-পোদ্দারকে তো ফিরতেই হবে। মানুষ চাইছেন। তবে এক্ষুনি নয়। হাতে আগামী বেশ কয়েকটি ছবির কাজ রয়েছে। সেগুলো শেষ করে, তারপরে আবার এই জুটিকে পর্দায় ফেরাব নতুন গল্প নিয়ে। এখানেই ওদের সফর শেষ নয়… দর্শকই চাইছেন ওদের আরও দেখতে।

প্রশ্ন: ‘অটোগ্রাফ’ থেকে শুরু করে ‘দশম অবতার’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের এই রসায়নের রহস্য?

সৃজিত: এই রে.. কেমিস্ট্রিকে তো লজিক্যালি ভাঙা যায় না এমনভাবে, ওটা হয়ে যায়। তবে বারে বারে দর্শক আমাদের কাজকে ভালবেসেছেন, পছন্দ করেছেন। আর সেটাই হয়তো আগামী ছবির, আরও ভাল কাজের সাহস যুগিয়েছে। ‘২২ শে শ্রাবণ’-এ প্রবীর একা ছিলেন, এবারে প্রবীরের সঙ্গে পোদ্দার। সব মিলিয়ে দর্শকদের খুব ভাল লেগেছে।

প্রশ্ন: সৃজিতের তো জোড়া সাফল্য বলা যায়.. একদিকে ‘দশম অবতার’, অন্যদিকে ‘দূর্গরহস্য’..

সৃজিত: হ্যাঁ.. ‘দূর্গরহস্য’ তো ক্রিটিক্যালি অ্যাক্লেমড। অনেকেই আফশোস করছেন, কেন আর ব্যোমকেশ বানাব না আমি। কেন অনির্বাণকে (Anirban Bhattacharyya) আর ব্যোমকেশের ভূমিকায় দেখা যাবে না। ‘হইচই’ (Hoichoi)-তেও নাকি অন্যতম সেরা ওয়েব সিরিজ হয়েছে ব্যোমকেশ। আর ‘দশম অবতার’-এর সাফল্যের কথা তো মানুষ বলছেন। তবে হ্যাঁ.. ২০১৫-র পরে, বহু বছর পরে পুজোয় একসঙ্গে ৪টে বাংলা ছবি মুক্তি পেল। ব্যবসার নিরিখে ‘দশম অবতার’ একটু এগিয়ে থাকলেও, ‘বাঘাযতীন’ আর ‘রক্তবীজ’ -ও নিঃসন্দেহে ভীষণ ভাল ছবি। সব মিলিয়ে এবারের পুজোটা বাংলা ছবির জন্য খুব ভাল সময় বলতেই হবে।

প্রশ্ন: ‘দশম অবতার’-এ তো চার দুঁদে অভিনেতা.. আপনার পছন্দ হিসেবে যদি ক্রমানুযায়ী সাজাতে বলি?

সৃজিত:- এটা আমি একেবারেই বলতে পারব না। বুম্বাদা (Prosenjit Chatterjee), অনির্বাণ (Anirban Bhattacharyya), যীশু সেনগুপ্ত (Jisshu Sengupta), জয়া আহসান (Jaya Ahsaan) প্রত্যেকে নিজের জায়গায় অনন্য। তবে চরিত্র হিসেবে যদি বলি, অনির্বাণের চরিত্রটার প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। বুম্বাদা, জয়া, যীশু.. প্রত্যেকের চরিত্রই অনেকাংশে Author Backed। তবে অনির্বাণের ক্ষেত্রে একেবারেই তা নয়। ওর চরিত্রের প্রচুর স্তর রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ওকে আমি এই ছবিতে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, পোদ্দারের এই চরিত্রটা দিয়ে। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উৎরে গিয়েছে অনির্বাণ।

প্রশ্ন: এক একজন দর্শকের, এক একটা দৃশ্য মনে ধরেছে। পরিচালকের পছন্দ কোনটা?

সৃজিত:  ক্যান্টিনে ঝামেলার পরে যেখানে প্রবীরের কাছে ক্ষমা চাইতে এল পোদ্দার.. ওই দৃশ্যটা আমার সবচেয়ে পছন্দ। ভীষণ গভীরতা রয়েছে ওই দৃশ্যের মধ্যে।

প্রশ্ন: বুম্বাদাও কিন্তু এই একই উত্তর দিয়েছিলেন….

সৃজিত: (হেসে) … তাই নাকি! এ নিয়ে আমাদের কিন্তু কোনও কথা হয়নি। রসায়নের কথা বলছিলেন না? এটাই তো কেমিস্ট্রি।

(Feed Source: abplive.com)