Lokkhi Chhele: অনুরোধে ভিজছে না চিড়ে, ‘বহিরাগত’ বয়কটের মুখে ‘লক্ষ্মী ছেলে’

Lokkhi Chhele: অনুরোধে ভিজছে না চিড়ে, ‘বহিরাগত’ বয়কটের মুখে ‘লক্ষ্মী ছেলে’

Lokkhi Chhele, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বলিউডের বয়কট ট্রেন্ড এখন টলিউডেও। একের পর এক বাংলা ছবি বয়কটের ডাক দিচ্ছে নেটপাড়া। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত রাজ চক্রবর্তীর ধর্মযুদ্ধ বয়কটের ডাক দিয়ে তৈরি হয়েছিল হ্যাশট্যাগ। এরপর সেই বয়কটের ডাক পড়ে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত পরিচালিত ও ঋদ্ধি সেন-শুভশ্রী অভিনীত ‘বিসমিল্লাহ’ ছবির। এবার সেই তালিকায় নতুন নাম কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘লক্ষ্মী ছেলে’। আগামী শুক্রবার মুক্তি পেতে চলেছে এই ছবি। তার আগেই ফেসবুক ও ট্যুইটারে এই ছবিকে বয়কটের ডাক দিয়েছে নেটপাড়ার একাংশ।

‘লক্ষ্মী ছেলে’ ছবির মিনিট তিনেকের ট্রেলারেই দেখা যায় অন্ধ বিশ্বাস, কুসংস্কার, নিচু জাত-উঁচু জাতের সংঘর্ষ, গ্রামের মানুষের ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে তিন ডাক্তারি পড়ুয়া আমির, শিবনাথ, গায়েত্রীর লড়াইয়ের গল্প শোনাবে এই ছবি। সূত্রের খবর, সেন্সর বোর্ডে এই ছবিকে ছাড়পত্র দিতে চাননি বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বাবুল সুপ্রিয়, যিনি সেই সময় ছিলেন বিজেপি নেতা। তাঁর তত্ত্বাবধানেই সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘লক্ষ্মী ছেলে’। কিন্তু এর মাঝেই বদলেছে বাবুলের রাজনৈতিক সমীকরণ তাই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বয়কটের সম্মুখীন হতে পারে এই ছবি, এবার সেই আশংকাই সত্যি হল। এই বয়কট কালচারে বিরক্ত টলিপাড়ার তারকারা।

পরিচালক রাজ চক্রবর্তী জি ২৪ ঘণ্টাকে জানান, ‘বয়কট বলে কোনও ট্রেন্ড নেই। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের আইটি সেল এই ট্রেন্ড তৈরি করার চেষ্টা করছে। সব সেক্টরই ওরা নিজেদের কন্ট্রোলে রাখতে চায়। ওরা ধর্মযুদ্ধ বয়কট করার জন্য অনেক কিছু করেছে কিন্তু পারেনি। পরিচালক হিসাবে আমি বলতে পারি, সিনেমা যদি ভালো হয়, যদি সিনেমা দেখার ইচ্ছে থাকে মানুষের তাহলে তাঁরা সিনেমা দেখবে। অনেকসময় সিনেমা ভালো হলেও যদি দেখার ইচ্ছে না হয়, তাহলে অনেক সময় বিষয়ের কারণে, নামের কারণে তারা সিনেমা দেখে না, সেক্ষেত্রে সিনেমা চলে না। আমারও অনেক সিনেমার ক্ষেত্রে এটা ঘটেছে। এটা যেন ওদের মাথায় না ঢুকে যায় যে ওরা বয়কট করল বলে সিনেমাটা চলল না। ধর্মযুদ্ধের সঙ্গে ওরা এটা করেছে, বিসমিল্লাহর সঙ্গে এটা করছে, লক্ষ্মীছেলের সঙ্গে এটা করছে। ঋদ্ধি সেন বলেন, ‘বয়কট প্রসঙ্গে ঋদ্ধি সেন বলেন, ‘এই পোস্টগুলো রাজনৈতিক পোস্ট, জাতীয়তাবাদের বোধের সঙ্গে হিন্দু ধর্ম মিশিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সম্প্রীতির পোস্টে এই ধরনের কমেন্ট দেখা যায়’।

জীতু কমলের মতে, ‘একটা ছবি যখন সেন্সর থেকে ছাড়পত্র পাচ্ছে, সেটা সেন্ট্রালের সরকারের গঠন করা একটা বোর্ড, সেখানে সব রাজ্যের প্রতিনিধিরা থাকেন যাঁরা সিনেমাবোদ্ধা। সেই সেম্সর অমান্য করার শিক্ষা কোথা থেকে আসছে। এটার দায় শিক্ষাব্যবস্থার।’ রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বয়কট জিনিসটা খুবই অগণতান্ত্রিক ও বোকা বোকা লাগছে। এভাবে কিছু হয় না, হবেও না। বাংলায় এই বয়কট ট্রেন্ড খুব একটা দেখছি না। যদি কোনও সিনেমা চলার হয় তাহলে ঠিকই চলবে’। শ্রীলেখা মিত্র জানান, আমি কখনই এই বয়কট কালচারকে সাপোর্ট করি না। এই যে সবাই এত হুজুগে চলে। কেউ একজন ঠিক করে দিল আর সেই হাওয়ায় সবাই চলছে। একজন শিল্পী তাঁর মতো করে তৈরি করতে পারে। সেটা ধর্ম নিরপেক্ষ কিনা সেটা দেখে বিচার করুক’। কৌশিক সেনের মতে, ‘ছবি বয়কটের ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, ধর্মের অংশটা বিশেষ বড় নয়। ধর্ম নিয়ে যাঁরা বলছেন তাঁদের সংখ্যাটা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক। সম্প্রতি হৃতিক রোশনের বিজ্ঞাপন নিয়ে যেটা হল তার কোনও মানে নেই। বিজেপি আসার পর ধর্মটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে কিন্তু সবাই ধর্মের কারণে করছে এমনটা নয়। কিছু মিশ্র ব্যাপার রয়েছে। যেমন এটা একটা ছোঁয়াচে হুজুগ’।

Source: zeenews.com)