#কলকাতা: রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়াই ডায়াবেটিস। একে মারণ রোগ বলা হয়। ডায়াবেটিস হলে অগ্ন্যাশয়ে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো একে একে খারাপ হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিস হলে সবার আগে তার লক্ষণ ফুটে ওঠে পায়ে। দু’ধরনের সমস্যা হয়। ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি এবং পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজ। ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিতে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজও রক্তের প্রবাহকে প্রভাবিত করে, যার ফলে পায়ের মধ্যেই বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়।
পা এবং পায়ের পাতায় ব্যথা, অসাড়তা: ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি অধিকাংশ ক্ষেত্রে পা এবং পায়ের পাতার স্নায়ুগুলির ক্ষতি করে। এর প্রধান লক্ষণ হল পা এবং পায়ের পাতা ও হাতে হাতে ব্যথা এবং অসাড়তা। এছাড়া এটা পাচনতন্ত্র, মূত্রনালী, রক্তনালী এবং হৃদপিন্ডের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ফুট আলসার: পা এবং পায়ের পাতায় বড় বড় কালশিটে পড়ে যায়। সেখান থেকে ঘা-এর মতো হয়। ১৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যেই পায়ের পাতায় ফুট আলসার দেখা গেছে। শুরুতেই এর চিকিৎসা না করালে অঙ্গচ্ছেদ পর্যন্ত করতে হতে পারে। পায়ে ক্ষত হলে মৃত ত্বক এবং টিস্যুগুলোর অপসারণ, উপযুক্ত ওষুধ প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে ড্রেসিং করা গুরুত্বপূর্ণ। খালি পায়ে হাঁটা চলবে না।
হাজা: এক ধরনের ছত্রাক সংক্রমণ হলেও ডায়াবেটিস একে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলে চুলকানি হয়। সঙ্গে জায়গাটা লাল হয়ে যায়। ধীরে ধীরে পা ফাটতে শুরু করে। দূষিত মেঝে, তোয়ালে বা পোশাকের কারণেও এমনটা হতে পারে।
কড়া: শুধুমাত্র খারাপ জুতো বা পায়ে চাপ পড়ার জন্য নয়, ডায়াবেটিসের কারণেও এমনটা হয়। কড়া মূলত দুই রকমের হয়- ইংরেজিতে যাদের বলে কর্ন এবং ক্যালাস। কর্ন হল পায়ের অস্থি অঞ্চলের কাছে বা পায়ের আঙ্গুলের মাঝখানে শক্ত ত্বক জমাট বেঁধে যাওয়া। অন্য দিকে, ক্যালাস হল পায়ের নিচের অংশে বা পাতায় শক্ত ত্বকের গঠন।
নখে ছত্রাক সংক্রমণ: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওনিকোমাইকোসিস নামের ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি থাকে, যা সাধারণত পায়ের নখকে প্রভাবিত করে। এতে নখ বিবর্ণ (হলুদ-বাদামি বা অস্বচ্ছ), পুরু এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়।
গ্যাংগ্রিন: রক্তনালীর মাধ্যমে পা এবং পায়ের আঙুলে রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহ হয়। ডায়াবেটিস হলে রক্তনালী প্রভাবিত হয়। ফলে রক্ত এবং অক্সিজেন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে গ্যাংগ্রিন হতে পারে। এককথায় রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে এবং টিস্যু মারা গেলে গ্যাংগ্রিন হয়। এমনটা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অঙ্গচ্ছেদ করতে হয়।
পায়ের বিকৃতি: আগেই বলা হয়েছে ডায়াবেটিসে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে পায়ের পেশি দুর্বল হয়ে যায়। একসময় মেটাটারসাল হেড এবং পেস ক্যাভাসের মতো সমস্যা তৈরি করে।