ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO প্রতি মুহূর্তে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞানে’র উপর নজরদারি চালাচ্ছে (Chandrayaan 3 Landing)। তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ISRO-কে সাহায্য করছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিও (ESA). তবে এই নজরদারি মাত্র দু’সপ্তাহের জন্য সীমিত নয়। তার পরেও চন্দ্রপৃষ্ঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’কে ব্যবহার করবে ISRO.
আপাতত চাঁদের বুকে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞানে’র কার্যকালের মেয়াদ এক চন্দ্রদিবস বেঁধে দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর হিসেবে যা প্রায় ১৪ দিন। অর্থাৎ পৃথিবীর বুকে যেমন ১২ ঘণ্টা আলো এবং ১২ ঘণ্টা অন্ধকারের নিরিখে গোটা দিনের হিসেব হয়, চাঁদের বুকে এই হিসেব হয় ১৪ দিনের নিরিখে। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে, ১৪ দিন সূর্যের আলো পায় চাঁদ, বাকি ১৪ দিন কাটে অন্ধকারে, প্রচণ্ড ঠান্ডায়। এই মুহূর্তে সূর্যের আলো রয়েছে চাঁদের বুকে। তাই রোদ গায়ে মেখে নির্বিঘ্নে কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারছে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’। তবে অন্ধকারময় সময় শুরু হলেই যে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে, এমনটা নয়।
ISRO সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ধকার নামলে কাজকর্ম বন্ধ রাখা হবে, নিস্তেজ করে রাখা হবে তাদের। অন্ধকার কেটে ফের পরের ১৪ দিন যখন সূর্যের আলোয় আলোকিত হবে থাকবে চাঁদ, আবারও প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনা হবে। ফের কাজে নামতে হবে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’কে।
বুধবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী, সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’।তার বেশ খানিক ক্ষণ পর, ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে, চাঁদের মাটিতে নামে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞানে’র সম্মিলিত ওজন ১৭৫২ কেজি। শুধুমাত্র ‘প্রজ্ঞানে’কে ধরলে, ২৬ কেজি ওজন তার। আপাতত ১৪ দিনের কাজ বরাদ্দ করা হলেও, পরবর্তী কালে তার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছোঁয়ার আগে তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ISRO প্রধান এস সোমনাথ।
সেই সময় ISRO প্রধান সোমনাথ বলেছিলেন, “একটি একটি করে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এক চন্দ্রদিবসের মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে হবে সেগুলি। যত ক্ষণ মাথার উপর সূর্য থাকবে, তত ক্ষণ শক্তির জোগান থাকবে। সূর্যাস্ত হওয়া মাত্র তাপমাত্রা -১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। ওই তাপমাত্রায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তার পরও যদি কোনও ভাবে টিকিয়ে রাখা যায়, তাহলে অতি উত্তম। আবার প্রাণসঞ্চার করে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা যাবে।”
ISRO প্রধান সেই সময় জানিয়েছিলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডা সহ্য করে যদি কোনও রকমে টিকে যায় ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’, তাহলে চাঁদের মাটিতে রাসায়নিক পরীক্ষাও চালানো পরীক্ষা রয়েছে তাঁদের। আলফা পার্টিকস এক্স রে স্পেকট্রোমিটার (APXS) পেলোড নামিয়ে চাঁদের মাটি এবং পাথরের উপাদান পরখ করে দেখা হবে। লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (LIBS)-চাঁদের মাটি থেকে রাসায়নিক এবং খনিজ উপাদান টেনে বের করবে, যাতে গবেষণায় সুবিধা হয় বিজ্ঞানীদের।
(Feed Source: abplive.com)