‘রোজ সাড়ে ছ’টায় বাড়ি ফিরতেন, জানতাম না বাবার কাজটা সবার থেকে আলাদা’

‘রোজ সাড়ে ছ’টায় বাড়ি ফিরতেন, জানতাম না বাবার কাজটা সবার থেকে আলাদা’

কলকাতা: ছোটবেলায় তিনি জানতেনই না, তাঁর বাবার কর্মজীবন বাকি সবার থেকে আলাদা। কী করেই বা বুঝবেন? সন্ধেবেলা আর সব বাবাদের মতোই তো সাড়ে ৬টার সময় বাড়ি ফিরে আসতেন তাঁর বাবা। তারপর গল্প, পড়াশোনার খোঁজ.. সবকিছুই তো নিয়মমাফিক। বাকি সবার মতোই। তিনি জানতেনই না, তাঁর বাবা টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা। রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick)।  বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কর্মজীবনে বাবার পরিচয় জানতে পারলেন বটে, তবে তাতে একটুও বদলে যায়নি বাড়ির সেই চিরপরিচিত বাবা। ‘ফাদার্স ডে’-তে এবিপি লাইভের কাছে বাবা রঞ্জিত মল্লিকের গল্পে অনর্গল মেয়ে কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick)।

রূপোলি পর্দার রঞ্জিত মল্লিককে কী কখনও বাড়িতে আনতেন বাবা রঞ্জিত মল্লিক? কোয়েল বলছেন, ‘বাবা মনে করতেন, কাজের সময় যতটা মন দিয়ে কাজ করা জরুরি, সমান কর্তব্য পরিবারকেও সময় দেওয়া। আমি যে সময়ের কথা বলছি, তখন বাবা একের পর এক ছবির কাজ করে যাচ্ছেন, সারা বছরই ব্যস্ততা। তবে কখনও রবিবার কাজ করতেন না বাবা। অত্যন্ত জরুরি দরকার না পড়লে, বাবার রবিবারটা সবসময় আমাদের জন্যই থাকত। ঘুম থেকে উঠে বাবাকে দেখা মানেই রবিবার। সেইদিন পরিবারের সবাই একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, সময় কাটানো… সবকিছু। তখন শ্যুটিং একটু অন্যরকমভাবে হত। এখনকার মতো দিনরাত জেগে কাজ নয়। বাবাকে দেখতাম উনি রোজ সাড়ে ৬টার সময় বাড়ি ফিরে আসতেন। ছোটবেলায় কখনও বুঝিনি বাবার কাজটা বাকি সবার থেকে আলাদা।’

বড় হয়ে সেই বাবার জুতোতেই পা গলালেন কোয়েল। সাহায্য করেছিলেন বাবা? কোয়েল হেসে বললেন, ‘আমার প্রথম ছবির ওয়ার্কশপ চলছে, আমি রোজ রিহার্সাল করছি। বাবা সেইসময় পরিচালককে বলে দিয়েছিলেন, কয়েকদিন দেখে আমি অভিনয় না পারলে যেন ছবি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় আমায়। সেইসময় জানতে পারিনি। পরে জানতে পেরেছিলাম বাবা আমায় ছবি থেকে বাদ দিতে বলেছিলেন। এখন বুঝি বাবা আমার ভালোর জন্যই বলেছিলেন। একটা ছবির সঙ্গে পরিচালক, প্রযোজক থেকে শুরু করে কত লোকের যে রুজিরুটি জড়িয়ে থাকে তা বোঝার বয়স আমার হয়নি তখনও। এখন বুঝি বাবা সেদিন আমার ভালোর জন্য়ই বলেছিলেন। তবে ছবি থেকে আমি বাদ পড়িনি। পরবর্তীকালে বাবা বার বার সতর্ক করেছেন যে ইন্ডাস্ট্রি খেলার জায়গা নয়, মন দিয়ে কাজ করতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা মা বন্ধু হয়ে যান। আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। ছবির চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে মনখারাপ, সবই শেয়ার করা যায় বাবার সঙ্গে। বাবার খুব ধৈর্য্য, আর বাড়িতে খুব কথা বলেন। আমিও অজান্তের বাবার থেকে সেই ধৈর্য্য আর কথা বলে সবকিছু সমাধান করার স্বভাবটা পেয়েছি।’

ফাদার্স ডে? একগাল হেসে কোয়েলের উত্তর, ‘আমার কাছে… ৩৬৫ দিনই।’

(Source: abplive.com)